সাধ


সাধ ছিল মরে যাব তরুণ বয়সে
যেদিন আকাশ ব্যেপে ফুল চন্দ্ৰলোক
ছড়াবে মধুর হাসি, ভ্রমরের অপূর্ব ঝঙ্কার
জেগে রবে ফুটি ফুটি চম্পকের বনে, জাগাবে
বুকের তলে করুণ বেদনা। ডাহুকির মত রাত
গাঢ় মমতায় নীরবে মেদুর হবে, করুণায়
উথলাবে হিয়া। অর্ধ জাগরণে দৃষ্ট স্বপ্নের মতন
অভ্যস্ত জীবনখানি চিরতরে ফেলে
অন্তরে যে বাঁশি বাজে তার সুর ধরে
একাকী গমিত হৰ নক্ষত্রের পথে
দেবতার পুত্র আমি এখানে কি কাজে আছি
হেলায় হেলায় জীবনের মৃগয়ার দিন চলে যায়।
অতএব এই বেলা চল
মিলবে কি কোনদিন এরকম সুন্দর প্রয়াণ।


যখন তোমার সঙ্গে দেখা হল নারী
প্রাণের উপাত্তে এল আনন্দিত দাহ, বাক্যে রস
পাখ-পাখালির কণ্ঠে শুনি গন্ধর্ব নিন্দিত সুর
তরুরাজ গায় ধীর বিলম্বিত লয়ে সুকণ্ঠ সঙ্গীত।
কাঙ্ক্ষিত সকল ধন কান্তিময়ী তোমার শরীরে
যেন বয় ঢল ঢল নবীন লাবণী। পিপুলের
ঘন ছায়া দৃষ্টি হতে ঝরে,
অবেলায় স্নাত হয়ে যাই।
এমন তোমাকে ছেড়ে কোথা যাব?
কোথা আমি যেতে পারি? পাখি কি
কোথাও যায় প্রাণপূর্ণ বাসাখানি ছেড়ে?
আবিষ্ট প্রাণের পরে
সাধ করে চড়িয়েছি সোনার শৃঙ্খল
জন্মান্ধের মত তাই দুবেলা পায়ের কাছে ঘুরি
অন্তরে কামনা করি দৃষ্টিপটে এ অন্ধতা চিরদিন থাক।