সুন্দরী তোর রূপের চমক নয়ন মনে উদ্ভাসি
থরেথরে সোনার কমল আলোকধারায় যায় ভাসি।
নিশিভরা মাথার কেশে রত্নমণির অলংকার
তারার ফুলে ঝলসে ওঠে অগ্নিবরণ অহংকার
হাজার নারীর কণ্ঠহারে যখন জাগে তরঙ্গ
মরি মরি সুন্দরী তোর জলকেলিতে কি রঙ্গ
মেখলা পরা আঁচলখানি দেখে দেখে দিন কাটে
রূপের ঝলক সইতে নারি চোখ ফাটে কি বুক ফাটে
শরৎকালে রাত পোহালে আলোকধারার বানভাসি
প্রাণে বুলায় রঙিন তুলি নতুন ভোরের ওই হাসি।
হেমন্তে তোর মাঠে দেখে কনকধানের মঞ্জরি
মন মৌচাকে মৌমাছিরা সুখে ওঠে গুঞ্জরি
নিঠুর শীতে কৃশতনু জায়নামাজে রাত জাগিস
নদীর চরে চষা ক্ষেতে ফুল ফসলের বর মাগিস
মাঘ-নিশীথে কোকিল ঢেলে সুরের সুধার লহরি
বুড়ো বটের জটা নেড়ে জীবন জাগায় শিহরি
নাকের বেশর পায়ের ঘুঙুর রঙ-বেরঙের ফুলরাশি
বসন্তে তোর কান্তি হেরে প্রাণ পরেছে প্রেম ফাঁসি।
বোশেখ মাসে পাগল ভীষণ গাজন তলার মুক্তকেশ
সংহারিণী মূর্তিতে তোর রূপ দেখেছি তার বেশি
আষাঢ় মাসে দেয়ার ডাকে রূপবতী কী মুরতি।
জলের তোড়ে নদীর ধারা তরঙ্গিত বেগবতী।
পাহাড় যেন কুচের মিনার যৌবনেরই রসভারে
উপচে পড়ে দুধের ধারা আঁকা বাঁকা জলধারে
জলের ফণায় আঘাত হানিস করালিনী কুলনাশী
তোরে আদর করে বক্ষে জড়াই চরাচরের আগ্রাসী।
নীলক্ষেত
১৩.১২.৭৮