চোখ

এখন চোখ নিয়েই হলো আমার সমস্যা। যেন
আমি জন্ম থেকেই অতিরিক্ত অবলোকন শক্তিকে
ধারণ করে আছি।

প্রতিটি বস্তুর বর্ণচ্ছটা বিকীর্ণ হচ্ছে আমার দৃষ্টিতে।
মানুষ যখন কোনো বর্ণের বিবরণ দান করে
আমি বুঝতে চেষ্টা করি।
আমি বুঝতে পারি না তোমরা কী করে
কোনো রঙিন জিনিসের নাম নির্ধারণ কিম্বা
শস্যক্ষেত্র দেখে আপ্লুত হয়ে বলে ওঠো
সবুজ, সবুজ।
আমি যখন সবুজের দিকে তাকাই
সে আর সবুজ থাকে না। আমি
গলিত মথিত সবুজের সাথে
নিজেকেও সবুজাভ দেখি।

আমার স্ত্রী সবুজ হয়ে যান, ছেলেদের
সবুজ বলে মনে হয়।
যে মেয়েটি নীল ফ্রক পরে বারান্দায় খেলে
সেও যেন সবুজ প্রজাপতি।

তারপর শুরু হয় সবুজের পীড়ন।
সবুজ আমার চোখে আঘাতের মতো বাজতে থাকে।
আমার চোখে তখন সবুজকে লাল বলে মনে হয়।
সে লাল আবার নীল হয়ে যায়। তারপর কালো।
এইভাবে শতবর্ণে রঞ্জিত হতে হতে

শাদা এসে সব কিছুকে ঢেকে ফেলে। আমার
চোখ তৃপ্ত হতে থাকে। আমি তখন
স্ত্রীকে দেখি না, পুত্রকন্যাকে দেখি না।
না, আমি দৃষ্টিভ্রমের কথাও বলছি না।
আমার চোখে কোনো অসুখ নেই। ডাক্তার ওদুদ
আমার চশমার প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন না।
সম্ভাব্য দূরত্ব থেকে আমি প্রতিটি অক্ষর
ঠিকমতো পড়তে পারি।

সোনালী কাবিন (১৯৭৩)