এই হ্রদ

পুরোনো শালের লাল পশমের লাল
মেপ্‌ল্‌ পাতায়
ঝরে হ্রদ-আয়নায়।
আগুনি বেগুনি বেলা হঠাৎ দারুণ
জ্ব’লে উঠে ডোবে বহুগুণ, গাঢ় ঢেউয়ে। নির্বিত আকাশে
হেমন্তের স’রে-যাওয়া ছায়া মেঘ ছেয়ে আসে,
ঐ ঝিল, ঝিনুকি সন্ধ্যায় করে ঝিলমিল।
জ্বলন্ত নক্ষত্ৰ-খচা নীল
সারারাত্রি চলে, সুষুপ্তির গূঢ় তলে: কালো জলে।
ভোরে কে সবুজ-বেশী, রুমাল মাথায়, দ্রুত পায়
কলেজের উঁচু পথে চ’লে যায়, একই আলো ঠিক্‌রোনো
লেকে আর চোখে তার; ঈষৎ ঝলক হাসি মনের লুকোনো,
মুখে দোলে, কোমল জ্যোতির কল্লোলে।
আইভি-জড়ানো থাম, লাইব্রেরি-সিঁড়ি, বাঁকে
জাপানী চেরির ভিড়ে শাদা ছায়া চেয়ে থাকে,
বসন্ত গলিতে
দলে-দলে, ছাত্র-ছাত্রী চলে, যৌবনী জনতা কলরোলে,
বোদ্দুরি নিভৃতে
চলচ্ছবি ধরে দিঘি; বাঁধে পিয়ানোর টুংটাং, ভরে
কল্পিত আকাশী ঘন জেন্‌সিয়নের স্তরে-স্তরে
ফুটন্ত অক্ষরে।
নামে
অন্যদিন, ক্যান্‌সসের গ্রামে
রাশি-রাশি, স্নো-এর অজস্র পাপ্‌ড়ি নিঃশব্দবিলাসী
শুভ সূচির শিল্প। ভুলে-যাওয়া ছোটো হ্রদে ধুক্‌ধুক্
কাঁপে বুক, তুহিনউর্মিত জলে, ধূসর শ্বেতাভ সমতলে;
বরফের ধ্যান-জমা শীতের অগণ্য বহুপারে
শোনে তারি বাঁশি
নাগাল পায় না যার, যে চিরপ্রবাসী
মেডিটরেনিয়নের দৃষ্টি-তীরে, অলিভ-দোলানো রাস্তাধারে।