আরুণি

কোন পথিকের নাম এই ঘরে বাঁধো।
যে গিয়েছে তারি আরুণিক
চিহ্ন আঁকা স্মরণী ফলকে;
আলোয় আকাশে খোলা বহুদিন
নম্রলেখা বহে গৃহদ্বার।
সমুদ্রের ওপারে আরুণি।।
উদ্বেল চঞ্চল জলতীরে
সংসারের সাক্ষী সেই ছোটো বাড়ি
ঝাউঘেরা দূরে;
অক্ষয় বালির খরতায়
সিঁড়ি নামে, শান্ত দৃষ্টি নীলধারা।।
পরম আত্মীয় কত কাল
চ’লে গেছে,
তবু তার সব কথা ভোরে ভরা
বুকের একটি রেখা বেয়ে ফিরে জানি
কালান্তর দেশান্তর থেকে,
ঝোড়ো শব্দ-ঢেউয়ে কাঁপা।
হারানো সন্তান শোকে যাঁরা
শান্তির আশ্রয় গেঁথে পুরীপ্রান্তে
বাগানে ফুলের গাছে আমাদের নতুন সংসারে
দিলেন পুণ্য তীর্থ,
তাঁরাও গেছেন;
স্বর্গভাঙা পরিবার আজ দুই লোকে।
অপরাহ্ন ম্লান হ’য়ে আসা এ-জীবনে
মনোগামী আভা পথে যেতে-যেতে
হঠাৎ আরুণি দিন ফিরে পাই, রুদ্রাক্ষের
মন্ত্র ঠেকে প্রত্যক্ষ ধ্রুবতায়
প্রাণের প্রতীকে।
সন্ধ্যায় চামেলি বর্ণা আনন্দ ভবন
যে-বাড়ি আজকে আর নেই আমাদের,
তারি নাম দিক্ ধরণীতে
নিত্য সৌরতার
আসা আর যাওয়া শেষ করা
ঘরে-ফেরা দিন।।