স্ট্রীম লাইনর থেকে

কেউ বুঝি বলেনি তোমায়-
সূর্য উঠেছে স্নাত রাঙা শূন্যে
তারার তোরণ পার হ’য়ে;
একটুও শেষ রাত নেই।
স্নিগ্ধ পূর্বতা কাঁপে বিন্দু তৃণে,
রাশি-রাশি পাখি-ডাকে কুঞ্জিত স্টেশন।
গেরুয়া আরক্ত নীলে
ভোর ভাঙা রেখা চিরে ছুটেছে এ-ট্রেন
চন্দন আলোর প্রসারে;
দিগন্তে অগাধ দৃষ্টির
পর্যায়ে-পর্যায়ে খোলে ধূসর প্রেয়রি,
ঠাণ্ডা নীল কাঁচে
টেক্‌সসে আমার জানলা মাটি-রৌদ্র মাখা।
কেউ কি বলেনি
চিত্রিত জীবনে পাতা খোলা
ক্বচিং বসতি ঘেরা গাঢ় গাছ আন্দোলিত,
শিশু খেলে কিণ্ডারগার্টেনে;
উজ্জ্বল ছায়ার স্পর্শ ছিঁড়ে
আলোর ঝালর মেশে বেগ্‌নি ক্যানিয়নে।
স্ফটিকের ছুরি
একটু নদী ঝিরিঝিরি পাথরের তলে,
সব সঙ্গ হারায় কোথায়;
হঠাৎ দু-চোখে
কালো-মাটি কাপাসের দ্রুত শ্যাম লাগা,
দীর্ঘ ভূমিকায় ঠেকে:
রুদ্রাভ বালির রাঞ্চে যেখানে গোধূলি।
-আশ্চর্য প্রথম দেখি ধৃতি ধরণীর।।
পাত্র দাও, এই বুক পাত্র করে, প্রাণ,
ভ’রে-ভ’রে নেবো
উঁচু-নিচু আদিগন্ত মাঠ, স্বর্ণায়না
অপর্যাপ্ত অভ্রনীলা জ্যোতির অঙ্গনা বসুমতী।
তোমাকেই শোনো বলি,
এই ট্রেনে ফোটে ঝরে একটি দিন জ্বলন্ত মলিন-
অজানায়
যাত্রী আজ প্রবাসের আদিম দীক্ষার নত ক্ষণে
চলি যেই দূর স্যান্‌ অ্যান্টোনিয়োয়।।