ত্রয়ী

(বোধিসত্ত্ব)

কালো পাথরের শীতে অচল মূর্তির সারি জমে
প্যাসিফিক তীরে মুজিয়মে।
স্থিতির ভগ্নাংশ কাল, বাক্‌-হারা ভাঙা দেহে ছায়
বিকীর্ণ মসৃণ বারান্দায়।
পণ্যের সংগ্রহে সখ্য, সযত্নে বিস্মৃত কক্ষে তারি
পর্যটক করে পায়চারি:
এরি মধ্যে অবিকার বোধিসত্ত্ব তুমি আছ ব’সে
নির্বাসিত স্তূপের প্রদোষে-
কারা এনে ফেলে গেছে এশিয়া-রাশির বস্তু কেনা,
নম্বর টিকিটে যাবে চেনা,
আদি যাত্রী আলোকের প্রয়াণ তোমার পদ্মচোখে
আজো নিমীলিত ধ্যানলোকে,
জটিল যুগের দৃষ্টি হঠাৎ প্রস্তর-উজ্জীবনে
খুলবে কি এই অন্ধ ক্ষণে?

(মনাঙ্ক)

মণিপদ্ম মণিমন্ত্র তুমি
ওঁ
ইলেক্‌ট্রনিক যন্ত্রে আজ
নেত্র কোণে বহুপূর্বী
ওঁ
নিয়ন্ত্রিত জ্বলজ্বল
ক্যাল্‌ডিয় নক্ষত্র দেখে মেষের-পালক
স্বচ্ছাকাশে
আদি রাশি সাংখ্যদৃষ্টি ওঁ ভারতীয়
ঊর্ধ্ব জ্যামিতিক কায়া মিশরের
শান্ত সূর্য চীন সমাঙ্কন
উত্তাল চিন্তন নীল আয়োনয়িন
কোথাও আরব লাল সমুদ্রের গাণিতিক
উজান লবনজল রেখা
ওঁ
তুমি সেই হৃদয়ের রত্নকোষ বেগ্‌নি রশ্মি
দিক্‌-নাবিক
পর্বতী তিব্বতী ওঁ
ধ্বনি ওঁ
দুরূহ আরব্ধ পথে
তোমার মুখের জ্যোতি পৌঁছিয়ে দেবে।।

(মহাঙ্ক)

বাহিরে ট্রাফিকে প্রৈতি কিসের অন্বেষী
(জাগো জনদেব জনে-জনে)
যুগের ঘর্ঘর ক্রমে বেশি।
সীমাভ্রষ্ট মনন-ঢেউ শানে মাথা কোটে
(জাগো জনদেব)
সংঘে-সংঘে শক্তির সংকটে।
(জাগো জনতার দেব জনে-জনে)
সৌধবন্দী লুব্ধতার শিল্প কা’রা দামী বিঘ্নে ঘেরে
-সাম্য সেও হন্য মন্ত্রে ফেরে-
(জাগো জনদেব)
জাতির দৌরাত্ম ক্ষোভ অশান্তির মানচিত্রে আঁকা
দেশে গ্রামে ওড়ে ছায়া-পাখা
(জাগো জনতার দেব জনে-জনে)
যে-প্ৰভব ঐশিতার মূল্যে বীর্য ঢালে
মহার্ঘতা যার মহাকালে
(জাগো জনদেব)
প্রলয় প্রস্তুতি দিনে আত্মাহুতি মত্ততায় কাঁপা,
সে-দৃষ্টি যায় না তবু চাপা।
(জাগো জনতার দেব জনে-জনে
জাগো জনদেব)
যে-আগুন দাহ নয়, দীপে দীপ্তি, সংদাহের দিনে
ঘরে-ঘরে নিতে হবে চিনে:
(জাগো জনদেব)
কৌশলীর কালো দ্বন্দ্বে আণব-বর্বর লগ্নে ভাবি
(জাগো জনদেব)
গড়া হবে কার ভস্ম দাবি।
(জাগো জনদেব জনে-জনে)
যে-মৈত্রী ও-ভুরু ছোঁয়, তোলে শুভ্র করুণা তর্জনী
(জাগো জনদেব)
রুধির-প্রদিগ্ধ দিনে তারি মুক্তি গণি।
(জাগো জনতার দেব জনে-জনে।।)