আমি আছি গগনে পবনে
এই অনুভূতি মোর সর্ব্বদেহ মনে
ক্ষণে ক্ষণে উঠিছে জাগিয়া,-
জানি না এ ধরণীর প্রতি অণুকণা
কিসে মোরে রেখেছে বাঁধিয়া!
নীলাকাশে তারায় তারায়
আমারি প্রাণের লেখা অজ্ঞাত ভাষায়
জানি না উঠেছে ফুটি কোন্ শুভক্ষণে-
বারে বারে কেন হয় মনে?
মহাবিশ্ব শুধু আমি-ময়
নিখিলের সাথে মোর প্রাণে প্রাণে যেন
হয়ে আছে চির-পরিচয়।
কখনো বিরাট হই- কভু ক্ষুদ্রতর,
মোর সত্তা ভরি ওঠে বিশ্ব-চরাচর,
দূর্ব্বাদল রচে মোর শ্যামল শয়ন
আমার শেখানো গানে প্রভাতে ধরায়
পাখী-কণ্ঠ আনে জাগরণ।
দিগন্তে মেঘের কাল রূপ
তারি মাঝে হেরি যেন নিজেরি স্বরূপ;
শিরায় শোণিতে মোর একি আকর্ষণ
কেন এই প্রাণেরি বন্ধন?
নিবিড় তিমিরে কভু হই আত্মহারা,
সাগরে মিশেছে যেন জীবনের ধারা,
তটিনীর কলরোলে গিয়াছে মিশিয়া
আমারি প্রাণের ছন্দ নাচিয়া নাচিয়া?
কার সাথে সারা বিশ্বময়
ক্ষণে ক্ষণে মোর দেখা হয়?
সে বুঝি আমার স্পর্শ বড় ভালবাসে,
বিদ্যুতের রূপে তাই মোর কাছে আসে?
আমি ভাবি আমি আজ হয়ে গেছি সেই
আমার পৃথক্ বলে কিছু আর নেই।
কুসুমের কোমল সৌরভে
শুদ্ধ বন-বীথিকার পল্লবে পল্লবে
বর্ণে গন্ধে মহা বিশ্বময়
বেঁধেছে নিখিল মোরে নিবিড় বন্ধনে
আমিই উঠেছি ফুটি গগনে ভুবনে
বারে বারে কেন মনে হয়?