নীল অস্তাচল পথে,
মুছি’ স্বর্ণ-রেখা,
যাত্রা করে মলিন তপন;
মিলায় ছায়ার বুকে
শেষ আলো-লেখা,
রচি এক মায়ার স্বপন।
মর্ম্মরি বিলাপে চির-
শ্যামল বনানী,
সকরুণ অজ্ঞাত ভাষায়;
গগনে মেঘের ফাঁকে
বিদায়ের বাণী
ফুটে ওঠে তারায় তারায়।
মুরছায় বেলাভূমে
অশ্রান্ত উচ্ছ্বাস
তটিনীর অফুরান গীতি;
পবন ফেলিছে মৃদু
ব্যথাভরা শ্বাস
আসে ভাসি জন্মান্তর স্মৃতি।
আমারে ঘিরিয়া নামে
নিবিড় আঁধার,
গ্রাসে ক্রমে দিক্দিগন্তর,
অনাহত ধ্বনি এক
ডাকি বার বার
ভরি ওঠে বিশ্ব চরাচর
গরলে অমৃতে পূর্ণ
বিচিত্র মরতে
কতবার যাই আর আসি;
আসিছে আহ্বান আজি
অনন্তের পথে,
ধরায় যে বড় ভালবাসি।
চাহি না অনন্ত সুখ,
অনন্ত আলোক,
চিরশান্তি অনন্ত সান্ত্বনা;
হতে চাই ভরা এই
জরা মৃত্যু শোক
ধরণীর ক্ষুদ্র ধূলি-কণা।
সেথা কি ফুটিয়া ফুল
থাকে গো এমন-
দিক্চক্র, বনরাজি নীলা,
এমনি সুষমাময়
গগন ভুবন
প্রকৃতির শোভাময় লীলা?
যাইতে চাহে না প্রাণ,
তবুও একেলা
ছুটিয়াছি অজানা সে পথে।
একি মহা আকর্ষণ,
কাহার এ খেলা,
কি আছে সে নূতন জগতে?