জীবনের পরপারে আছে পরলোক,
আলো কি আঁধার সেথা-
বাস্তব না স্বপ্নময়
জরা-মৃত্যু-শোকে পূর্ণ অথবা অশোক?
জীবের ভ্রমণ পথ যেথা হয় শেষ,
নীলোর্ম্মি সাগর তলে,
অথবা গগন পারে,
তপনে কি চন্দ্রমায়- কোথা সেই দেশ?
আসিয়াছি যেথা হতে যাইব আবার
নক্ষত্রে না মেঘলোকে,
কোথা সে বিস্মৃত রাজ্য?
জ্ঞানের অতীত তাহা ঘেরা অন্ধকার।
আসে কি বসন্ত-দূত হ’তে সেই পুর
আহ্বান বারতা বহি
নিয়ে যায় পুরাতনে,
সাজাইয়া ধরণীরে নূতন মধুর?
আছে কোন্ রাজা সেথা অথবা সে রাণী?
খুঁজিছে মানব-চিত্ত,
জানায় এ ধরণীরে,
বৈশাখী গগন কার বজ্র-দীপ্ত বাণী?
সন্ধ্যার আলোক আনে কাহার আভাষ?
শরতে শেফালি-গন্ধে,
ঊষার রক্তিমা মাঝে,
আসে ভাসি কিসের এ পরম আশ্বাস?
সিন্ধুর তরঙ্গময় অবিশ্রান্ত রোল
কোন্ মহামন্ত্রে পূর্ণ?
কাহার বন্দনা গাহে
তটিনীর চিরন্তন উতলা কল্লোল?
অশান্ত লভিবে কবে শান্তির নির্ব্বাণ?
কোথায় জ্ঞানের শেষ?
খুলে যাবে যবনিক
কে দিবে এ রহস্যের পরম সন্ধান?
আস্তিকের প্রাণময় সরল বিশ্বাস,
কে কহিবে সত্য কিনা-
অথবা কিছুই নাহি
চিরসত্য উচ্ছৃঙ্খল তীব্র অবিশ্বাস?
হয় তো সকলই ভুল–বিশ্ব অন্ধবৎ
চলিতেছে ভুল পথে-
অপূর্ব্ব আলোক সিন্ধু
কদিন ভাসাইবে সমগ্র জগৎ!