লক্ষ্মী-কে

(যে আমাকে বলেছিলো আমি ভাবুক নই)

লক্ষ্মী, তুমি বুঝতে যদি সত্যি-ভাবুকে,
তবে কি আর বাসতে ভালো নকুলবাবুকে!
কণ্ঠটি যার রঙ্গভরা, তরঙ্গ যাঁর অঙ্গে,
তোমার মতো ছোট্টো রঙিন ফুটফুটে পতঙ্গে
বন্দী করেন সুশ্রী ঠোঁটের মিশ্ৰিগুঁড়োয় যিনি;-
মনোহরণ দোকানে যার চলেছে রাতদিনই
দু-চার আনার বেচাকেনার আহ্লাদি হৈ-চৈ,
খুচরো গোনায় ব্যস্তলাজুক চুড়ির রিনিঝিনি।
-লক্ষ্মী, তুমি ঐখানেই বাঁধো তোমার তাঁবু,
আসুন যত বাংলাদেশে আছেন নকুলবাবু;
তারা তোমায় ডাকবেন প্রজ্ঞাপারমিতা,
তুমি বঁধবে খোঁপা তাদের ভাবুকতার ফিতায়।
তবু জেনো তোমার জন্য এই করি প্রার্থনা:
ভাগ্য তোমায় না যেন দেয় কেবলই বঞ্চনা;
সুদীর্ঘ হোক আয়ু, এবং দুঃসহ না হোক
শুকনো জরার তীক্ষ্ণ-কঠিন নখ;
আকাশ যেন তোমার চোখে পায় কিছু উত্তর
ক্রমে-ক্রমে বয়স যখন হবে পঁচাত্তর।
নয়তো, যখন কুকুর-ডাকা রাতে।
অনেক কালের ফেলে-রাখা বইয়ের ছেঁড়া পাতায়
দেখতে পাবে হঠাৎ কোনো সত্যিকারের ভাবুক-
কেমন ক’রে সইবে-যে সেই চাবুক, কড়া চাবুক!