একটি নিষিদ্ধ কবিতা

গোল চাঁদের শেষ ঘণ্টাধ্বনি বেজে গেলে আমি পুনরায় বাড়ি থেকে
বেরুলাম

সকালের নিপুণ করতালিতে সুন্দর বনরাজি শিউরে উঠলো তুমুল
প্রেম-প্রেম খেলায় অন্ধকার নিবাসগুলো মেতেছিল বহুক্ষণ;-ভেঙে গেল
হঠাৎ

না আমাকে দেখে নয়; তাহলে কার অভিসম্পাতে? সঠিক জানিনা-
কিংবা এও হতে পারে আমারি বদৌলতে!

গোল চাঁদের শেষ ঘন্টাধ্বনি বেজে গেলে আমি দেখলুম; হৈহৈ করতে করতে
একদল রমণীও পুরুষ মিলিত রক্তের স্রোতের মধ্যে থেকে উঠে এল পরস্পর
বাতাস ছিলোনা তখন; সবেমাত্র আঁধার গিয়েছে ছিঁড়ে কিশোরীর
পাজামার গিঁটের মতোন

তারপর খুলে গেল সেই একলা কপাট!

যে রমণী ও পুরুষগুলো দেখলুম; আমাকে দেখেই তারা বলে উঠল-
‘তাহলে তুমিই সেই। প্রত্যহ ভোরে এসে দেখে যাও আমাদের লীলা-খেলা!
কেন সাথী হতে পারো না?
দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা; তোমার চৌদ্দপুরুষ উদ্ধার করবো এই প্রাতে
ফেরেশতা সেজে এই ভুবনে?

শালা শুয়োরের বাচ্চা; কোথায় যাও হে?
আমরাই পাপীরে হারামজাদা?
তাহলে তুমি কি হে?

যখন শালা তুমি হেঁটে যাও ওই বিভিন্ন লোকালয় ধরে: আমরা বলি-
“দ্যখি ওই যে যায়; যায়, যায় মহেন্দ্রনিদ্রিতকান্তি; শুভ্রবসন
মাথায় পাগড়ি; অলৌকিক পোশাক-আশাক; আননে কি রূপের মায়া
দেখলেই শ্রদ্ধা হয়

আর এখন তুমি ঈশ্বর নামক বদমাসের একান্ত অনুচর হয়ে আমাদের কাছে?
দেখাচ্ছি দাঁড়াও; একদিনে কয় বৎসর পাওনি তো টের-
হাজার জলপানি খেয়ে আমরাও হয়েছি মানুষ; ইকড়ি-মিকড়ি খেলায়
আমরাই এতদিন ছিলেম বলে লোকে দুর্নাম দিতো-
তুমি কি শৈশবে একবারও এক্কাদোক্কায় হেরে গিয়ে টাননি বাসন্তীর
সূক্ষ্ম অন্তর্বাস?
ওই সবদিনে ঘুমের ভান করে রাত্রিকালে কি করেছিস ঠিক কোরে বল্;
নইলে-
নইলে এক্ষুণি প্রস্রাবে ভরে দেব তোর মুখ; জুয়োচ্চোর ফেরেশতা সেজে
এই ভুবনে?- বলে

লোকগুলো নিয়ে গেল বিশ বছরের রমণীদের কাছে
দেখলুম; সেই রমণীবৃন্দ সমস্ত পোশাক খুলে; উন্নত বক্ষে দাঁড়িয়ে
হা হা করে হাসছে
আমি তখন মৃতপ্রায় মানুষের মতো আল্লাহ’র কাছে প্রার্থনা করলুম
“আল্লাহ; আমার প্রার্থনা কবুল করো; আমি যেন রোজ ভোর বেলা
এইভাবে আসি
আর এইভাবেই তোমার অপূর্ব হস্তের কারুকাজ দেখে যাই-
হে আমার দয়াময়
তোমার এমন শিল্পকর্ম এতো আমি দেখিনি আগে?”

২৮/৯/১৯৭২