দ্বীপ নির্মাণ

প্রবাল দ্বীপের গোড়া পত্তন হবে,
কি করে সে কথা হ’য়ে গেল জানাজানি!
দল বেঁধে এল অযুত প্রবাল কীট
কাঁপায়ে দুপাশে দরিয়ার লোনা পানি।

রেখে এল তা’রা জীবনের সব সাধ,
ফেলে এল তা’রা জীবনের সব গান,
নব সৃষ্টির পথে চলে উন্মাদ;
ভিত্তিমূলেই জীবন করিতে দান।

অযুত, লক্ষ, কোটি প্রবালের দেহে
শত যুগ ধরি’ সেই দ্বীপ গ’ড়ে ওঠে,
কোটি প্রবালের তনুতে না হয় যদি
আরো বহু কোটি প্রবাল কীটেরা জোটে।

কবে দূরচারী পথিক পাখীরা এসে
কাকলি-মুখর সে দ্বীপে বাঁধবে ঘর,
জাগবে কখন প্রবাল দ্বীপের বুকে।
নারিকেল শাখে স্বপ্নের মর্মর।

প্রবাল কীটেরা জানে না সে কথা, তবু
দল বেঁধে তারা করে গোড়া পত্তন।
বৎসর কাটে.. শতাব্দী কেটে যায়…
তবু কোন দিন হয় না তো উন্মন।।

আকাশে, মাটিতে আসে বদলের পালা,
কত তারা নেভে, জ্বলে কত শশী রবি;
প্রবাল কীটের দ্বীপেরা ভিত্তি গড়ে
ধৈর্য, ত্যাগের সহিষ্ণুতার ছবি।

রাখে না খবর, খোঁজ রাখে না তো কেউ,
কেউ কোন দিন সন্ধান নাহি করে,
প্রবাল কীটেরা নিভৃতে গড়ে দ্বীপ
সকল আঁখির; সকলের অগোচরে।

প্রবাল দ্বীপের গোড়া পত্তন হবে
কি ক’রে পেয়েছে তা’রা সেই হাতছানি।
মৃত্যু যাদের ত্যাগের মহান ছবি
মওতেই তারা পায় যে জিন্দেগানি।।