এজিদের ছুরি

আমার দুঃস্বপ্নে আজ ফেরে ক্রূর এজিদের ছুরি
আজ সীমারের তীক্ষ্ণ খঞ্জরের নীচে কঁপে সংখ্যাহীন
ভারাক্রান্ত প্রাণ
আবার সম্মুখে মোর ঘনালো এ কোন্ মৃত্যু কারবালা ময়দান?

মানুষের মুক্ত মাঠে আনিয়াছে কা’রা
এজিদের ছুরির পাহারা!
সম্মুখে মৃত্যুর বাধা পশ্চাতে ক্রন্দন অগণন…

হে ইমাম! করো মৃত্যু পণ
পরো আজ শহীদী লেবাস
মা ফাতেমার কান্না ভরায় আকাশ
কোলে তীর-খাওয়া শিশু মৃত আসগর
কাঁদে আজ স্বৈরাচারী তামসিকতায়
মানুষের আজাদীর ঘর।
ঢাকা প’ড়ে গেছে আজ নর্তকীর নূপুর নিক্বণে
কোরানের ধ্বনি
জালিমের বজ্রমুষ্টি ঢাকিয়াছে নবীজীর উন্মুক্ত সরণি।
মদীনার মুক্ত খিলাফত
বালুকায় হারায়েছে পথ…
হারায়েছে ফোরাতের তটপ্রান্তে মানুষ সকল অধিকার
গোলামী জিঞ্জিরে শোনো ক্রমাগত ওঠে হাহাকার
অযুত প্রাণের নাভিশ্বাস!
তোমাকে ডাকিছে আজ হে ইমাম! কারবালা আকাশ
তোমাকে ডাকিছে আজ অবরুদ্ধ ফোরাতের তীর
তোমাকে ডাকিছে আজ মারণাস্ত্র এজিদের দুর্ধর্ষ সান্ত্রীর।

হে ইমাম! উঠে এসো, উঠে এসো, শোন
এজিদের ষড়যন্ত্র ক্রূর
দেখ আজ নির্লজ্জ দস্যুর
কুটিল চক্রান্তে বাঁধা ফোরাতের তটরেখা মৃত্যু আবেষ্টনে
ছুরির শাসনে
সভয়ে নিশ্চুপ বিশ্ব মৃত্যুমুগ্ধ শিকারের মত
দেখে চেয়ে শিশুকণ্ঠে রুধিরের ধারা
দেখে চেয়ে কূটচক্রী এজিদের ছুরির পাহারা…

হে ইমাম! শোনো উঠে এসো…

মানুষের মুক্ত সূর্য নেভেনি এখনো
আজো শত মুজাহিদ খুঁজে ফেরে তার
সিপাহ্সালার
মৃত্যুর বন্ধনী মাঝে আজাদীর মাঠের ইশারা
খুঁজে ফেরে তারা
শূন্য-পৃষ্ঠ দুলদুল সওয়ারের প্রতীক্ষায় থাকে
উত্তাল ক’রেছে তার রুদ্ধগতি ঝড়ের সন্ধ্যাকে…
আজো লক্ষ মুজাহিদ এজিদের খঞ্জরের নীচে
রুদ্ধ রোষে দিন গণে মিছে
ব্যর্থ হয় আর্তনাদ লক্ষ কোটি শিশুর, নারীর
শৃঙ্খল-আবদ্ধ হাতে পড়ে আরো কঠিন জিঞ্জির
বাঁধা পড়ে লু’ হাওয়ার গতি
বাঁধা পড়ে সাহারার ঝড়ের সংগতি

কারবালা ময়দান প্রান্তে
পাঠায়েছে শৃঙ্খলিত দীৰ্ণ হাহাকার

ভাঙো এই পাশবিক শিকলের ধারা
ভাঙো এই রক্তচক্ষু ছুরির পাহারা

হে ইমাম! শোনো উঠে এসো…