নাটকীয়


সুদীর্ঘ দিন রাত্রির মাঝে গোধূলির অবসর
তবু তো স্বপ্ন এলো।
হালকা হাসির বুকে পুঞ্জিত মন্দার-মেঘভার
তারি মাঝখানে অবসাদ এল জানি না তো কতবার,
শ্রান্তি রশ্মি মেলো
হায় পূর্ণিমা পাণ্ডুর রাতে প্রথম বিরহী চাঁদ
অমাবস্যার নিরাশ আঁধারে খোঁজে তারে উন্মাদ।


কেটে গেছে কবে ভরা জোয়ারের প্রচুর প্রগল্ভতা
আজ রাতে যবে শুধাইনু, তুমি কহ নাই কোন কথা;
পরিহাস নয় শুধু মনে করো মিছে অভিনয় ভার
আজ রাত তাই গভীর কৃষ্ণ কঠোর নীরবতার।


কৃষ্ণচূড়ার ফুল ধরেছিল একদিন তুমি জানো
সবুজ প্লাবনে অগ্নিশিখার দোলা
সেদিন আমরা কাছাকাছি থেকে কতবার পথ ভোলা
ভরা মুকুলের দিনে ঝরে যেতে দেখে বিস্ময় মানো।


কাল রাত্রির অজানা লগ্নে প্রহরী তারকা এসে
যে কথা শুনেছে আকাশের বুক ঘেঁষে
চতুর্দশীর পূর্ণতা পেয়ে অনাগত পূর্ণিমা
সে হাসি ছড়াল আমার ললাটে অকুণ্ঠ ভালবেসে;
আকাশ! তোমার প্রহরী তারকা-রশ্মি সে কোথা জানে
যে চতুর্দশী অস্ত গিয়াছে আলোকের ব্যবধানে?


স্বপ্ন জীবন মেঘের অন্তরালে,
লক্ষ-শিখায় অগ্নি ছড়ানো মেঘ-বিমুক্ত দিন
যে স্বপ্ন ছিল গৃহের প্রদীপ ক্ষণ অবকাশ কালে
লক্ষ-শিখার অগ্নি-শিখায় সে স্বপন আজ লীন।


পদতলে মোর বাষ্পাভরণ মৃত্তিকা হল কবে
দেখিলাম কত মৌসুমী সঞ্চয়,
ফুল ফসলের পথিক যাত্রী চলে গেল একে একে
দেখিলাম সব আশা আজো শেষ নয়।
সরল শাখায় দুরতিক্ৰমণীয়
পুষ্পিত মোর আনন্দ রমণীয়
কৃষ্ণচুড়ার শিখায় আমার ব্যর্থ রক্ত-লোভ।
তবু সে তো চায় অনাগত দিন, রাত্রি বিস্মরণ
হালকা হাসির মেঘ কেটে যাবে- একদিন যারা প্রিয়
আজিকে তাদের কাছে নাহি পেয়ে ক্ষুব্ধও নহে মন।

ক্লান্তি জরার অবকাশ কালে মুহুর্তে দিলে দেখা
সমাকর্ষণ রয়ে গেল অক্ষয়
সুদীর্ঘ দিন- রাত্রির মাঝে গোধুলির অবসর
আতপ্ত মোর চুম্বন আজো প্রিয়তম শেষ নয়।