বেশি কাজ বাকি নেই

বেশি কাজ বাকি নেই; যতোটুকু বাকি বেলা পড়ার আগেই
শেষ ক’রে উঠতে হবে। তবে খুব তাড়া নেই, যদি শেষ ক’রে
উঠতে না পারি, থেকে যাবে, ওরা আমার বা নিজেদের হয়ে
সম্পন্ন করবে, ওদের যতোই বকি তবু ভার দিয়ে যেতে
হবে ওদের ওপরই। নিজের সমস্ত কাজ কখনোই কেউ শেষ ক’রে
উঠতে পারে না। যদি শেষ ক’রে উঠতে না পারি ভারি হয়ে উঠবে না বুক;
দুপুর পর্যন্তই যতো অসন্তোষ, তারপর শুধু নিরুদ্বেগে কাজ ক’রে যাওয়া।
মাঠে যেতে হবে একবার, দেখতে হবে আগাছা উঠেছে কিনা,
পানি পৌঁচেছে কিনা ধানের শেকড়ে; দেখতে হবে গাভীদের দড়ি
কতোটা বাড়াতে হবে। কয়েক বালতি জল ঢালতে হবে
বেগুনচারায়, পথটাও ক্ষয়ে আসছে, কয়েক চাঙাড়ি মাটি ফেলতে
হবে এপাশে ওপাশে। উত্তরের জমিটায় যেতে হবে একবার;
বহুদিন হয় নি যাওয়া দিঘির ওপারে। বেশি কাজ
বাকি নেই, বেলা পড়ার আগেই শেষ ক’রে উঠতে হবে;
তবে কাজই বড়ো কথা নয়, ধারে শেকড়ে পানি
দেয়ার সময় সবুজের ঢেউয়েই মুগ্ধ হয়েছি বেশি, কাজ করছি ব’লে
কখনো হয় নি মনে, মনে হয়েছে আনন্দ করছি। গরুর দড়িটা
বাড়াতে গিয়ে ঘাসের মতোই মাংসে ঢুকেছে সুখ, উত্তরের জমিটায়
গেলে ঢেকে গেছি লাউয়ের পাতার মতো দিগ্বলয়ে। বেশি কাজ
বাকি নেই, বেলা পড়ার আগেই গোধূলি দেখতে দেখতে
ফিরবো ঘরে, যদি শেষ নাও হয় সব কাজ দুঃখ থাকবে না,
আমাকে থাকবে ঘিরে গোধূলির খুরের শব্দ পাখিদের স্বর উত্তরের জমির
গন্ধ রাতের আকাশ অসমাপ্ত অশেষ সুন্দর।