দ্বিতীয় জন্ম

তখন দুপুর বিকেল হয়েছে, গাছের পাতা
সোনালি এবং সবুজ এবং নরম ঘোলা;
আমরা তখন পৃথিবীর থেকে অনেক দূরে
আমাদের ঘিরে কুয়াশাবিবশ নদীর দোলা।
যেনোবা সবাই আমাদের ছেড়ে অনেক দূরে
চ’লে গেছে আর ফিরবে না আজ নদীর কূলে;
পৃথিবী নীরব বাতাস স্তব্ধ আমরা শুধু
তাকিয়ে রয়েছি আমাদের দিকে দু-চোখ খুলে।
তোমার আঙুল আমার আঙুলে মাছের মতো
ঘুরে ঘুরে ঢুকে বেরোতে না পেরে জড়িয়ে পড়ে,
আমি খ’সে পড়ি তোমার গ্রীবায় ফলের মতো
দাঁড়াতে পারি না কেঁপে কেঁপে উঠি সোনালি ঝড়ে।
ঝড় বয়ে যায় আমাদের ঘিরে প্লাবন জাগে
নদীতীর জুড়ে খেজুর বাগানে কাশের বনে,
আমরা তখন পরস্পরকে জড়িয়ে ধ’রে
বেঁচে থাকবার সাধনা চালাই শরীরে-মনে।
তোমার দু-চোখে জ্ব’লে ওঠে চাঁদ স্নিগ্ধ শাদা
দিগন্ত জুড়ে ব্যাকুল বিশাল কামিনী ফোটে,
আমরা তখন গন্ধে পাগল অন্ধের মতো
দুই ঠোঁট রাখি আমাদের দুই বধির ঠোঁটে।
কুয়াশায় ভরা সেই আশ্বিনে নদীর পারে
বদলে গেলাম, আমাদের পুনর্জন্ম হলো;
মাটির তখন অনেক বয়স- তিরিশ কোটি-
আমরা তখন কুয়াশাকাতর পনেরো-ষোলো।