গৃহনির্মাণ

কারফিউ নেই রাস্তা খোলা বৃষ্টিগাছপালা প্রভৃতির মতোন মসৃণ
কস্তুরীর নখের মতো লাল দিন এলো
বাঙলাদেশে বঙ্গদেশে
যুদ্ধ শেষ রক্তপাত নেই প্রকাশ্যে কি সংগোপনে
যে-নদী ভুলে ছিলো গান যে-জমি ভুলে ছিলো ধান
সে-সব উদ্বাস্তু নদীজমি ফিরে আসছে
যেসব জঙ্গলে ক্যামোফ্লাজ করতো দস্যুরা
তারা সব ম’রে গেছে উঠছে নতুন গাছ
উড়োচ্ছে সবুজ পাতা স্বাধীন বাঙলার পতাকার মতো

এখন আসবে
পলাতক প্রেমিকেরা প্রেমিকার হাত ধ’রে
তাই রাস্তা সবুজ মসৃণ
রক্তক্ষরণহীন বঙ্গদেশ সারা বাঙলা ব্যারিকেডহীন
শীতের দিনেও সবুজ সমস্ত পার্ক
নাতিশীতোষ্ণ সব নদনদী
তাই বুকে রঙ লাগে সিলেট বরিশাল খুলনা অবধি
ট্রাফিকপুলিশের অভাব সত্ত্বেও তাই দুর্ঘটনা ঘটে না
আসবেন প্রেমিক ও প্রেমিকারা এ-সংবাদ কে আজ জানে না

১৯৭১ যেমন ১৯৪৭-এর সংশোধন
তেমনি ভুল যারা করেছে ভালোবাসায়
সংশোধিত হবে সেই ভুল
এইবার: সংশোধিত হবে সংশোধিত হবে সংশোধিত হবে।
গতবার ওঠে নি নতুন ঘর জ্ব’লে গেছে ১০ লাখ ৯০ হাজার
চোখের মণিতে যাদের রক্তিম টিপের মতোন গৃহ ছিলো
সেই সব সম্ভাব্য মন্দির
ওঠে নাই, বিকল্পে তুললো মাথা সারি সারি উদ্বাস্তু শিবির
ভিন্ন দেশে; গৃহধ্বংসের পর এইবার
গৃহনির্মাণের পালা
তাই আমার আপার ৩৮ বছরের বিপর্যস্ত দেহ
কাঁপছে মাঁচার লাউডগার মতোন মাঘের বাতাসে
৩০০ মাইল দূর থেকে আমার জানালায়
উড়ে আসে কস্তুরীর শাড়ি
হাসানের সানগ্লাসে নয় খালি চোখে কেঁপে কেঁপে ওঠে ছোটো ঘর
বহু দিন পর করিমন কলসি কাঁখে নির্ভয়ে যাচ্ছে জলে
তাই… তাই… তাই…
অগ্নির বিকল্প ঘর: বাঙলাদেশে উঠুক শ্লোগান
১৯৭২ বাঙলাদেশে প্রেম আর গৃহের বৎসর।