নদী

ঘুমিয়ে ছিলাম নীল পাহাড়ের বনে
হঠাৎ ঝিলিক লাগলো এসে মনে
ঝরনা হ’য়ে কাঁপল বুকের তল
ছলকে উঠল রুপোর মতো জল
রোদের চুমোয় সবুজ কুঁড়ি টুঁটে
নাম না-জানা উঠল কুসুম ফুটে
আকাশ জুড়ে জাগলো পাখির গান
শুনতে পেলাম ঢেউয়ের কলতান
দেখতে পেলাম ভুবনজোড়া নীল
তারার মতো উড়ছে সোনার চিল
সাগরে যাবো সাগর অনেক দূর
রক্তে আমার বাজলো তারই সুর
সাগরে যাবোই ব’লে বইছি নিরবধি
তাই তো আমার নাম হয়েছে নদী।

পাহাড়ে ছিলাম আহারে কতো কাল
দেখি নি তখন পুবের দিকে লাল
দেখি নি তখন আকাশজোড়া মেঘ
তখন আমার শরীরভরা বেগ
এলাম যখন পাহাড় থেকে নেমে
চলছি ধীরে আস্তে থেমে থেমে
আমার তীরে খোঁপার মতো গ্রাম
মধুর মতো কতো যে তাদের নাম
আমার জলে এলেই জাগে গান
আমার তীরে সোনারা হয় ধান
আমার বুকে রুপোর বালুচর
শিমের মতন চাষীর কুঁড়েঘর
বইছি আমি চলছি নিরবধি
তাই তো আমার নাম হয়েছে নদী।

আমার বুকে তারার মতো বালি
আমার জলে ঢেউয়ের করতালি
আমার তীরে মোমের মতো গাছ
আমার জলে মাখনভরা মাছ
আমার তীরে কাশবনের বধু
আমার জল গোলাপ ফুলের মধু
যাবো আমি অনেক দূরে যাবো
তখন আমি তার তো দেখা পাবো
বের হয়েছি যার হৃদয়ের ডাকে
সাগর আমার সাগরে সে থাকে
তবুও আমি মানুষই ভালোবাসি
ঘুরে ফিরেই গ্রামের পাশে আসি
বইছি আমি বইছি নিরবধি
তাই তো আমার নাম হয়েছে নদী।