অশ্রুবিন্দু

বেরিয়ে এলাম একা শূন্য লঘু বিবর্ণ মলিন।
আমার পেছন জুড়ে শূন্যতা; ফিরে তাকানোর সামান্য সাহস
হলো না, সত্যিই যদি শূন্যতা দেখতে পাই দাঁড়িয়ে রয়েছে
তোমার মতোই দরোজায়, তাহলে কীভাবে ফিরবো ঘরে?
কীভাবে হাঁটব আরো তিন যুগ ধ’রে?

জানালায় দাঁড়িয়ে হয়তো তুমি দেখছো জটলাবিহ্বল পথে
বাতাসের তাড়া খেয়ে এদিক সেদিক অসহায় বিব্রত উড়ছে
একটা ছেঁড়া কাগজের টুকরো, কৈউ ছিঁড়েফেড়ে
উড়িয়ে দিয়েছে- ছেঁড়া কাগজের মতো আমি উড়ছি রাস্তায়।

হয়তো দেখছো একটা শুকনো পাতা খ’সে পড়লো চৌরাস্তার
তুচ্ছ গাছটির ডাল থেকে। এর আগে চৌরাস্তার গাছটিই
পড়ে নি তোমার চোখে; আজ দেখছো চোখ ভ’রে একটা মুমূর্ষু পাতা
ভাঙা ময়লা প্রজাপতির মতো আটকে যাচ্ছে রিকশার চাকায়।

যতো দূর দেখতে পাচ্ছো তুমি দেখছো শুধু ধুলোবালি, আবর্জনা,
ধ্বংসস্তূপ; আকস্মিক ভূমিকম্পে ধ’সে গেছে সমগ্র শহর;
হয়তো দেখছো তুমি ধ’সে পড়া টাওয়ারে তলে পিশে গেছে
একটা তুচ্ছ কাক; তুমি ওই কাকটিকে চিনতে পারছে না।

হয়তো এখনো তুমি দাঁড়িয়ে রয়েছো অন্যমনস্ক জানালায়;
এবং দেখছো তোমার চোখের সামনে কোনো রাজধানি,
আকাশ ও মেঘ নেই; শুধু দূরে, বহু দূরে, টলমল করছে একবিন্দু অশ্রু-
তোমারই চোখ থেকে গ’লে পড়ছে তোমার মুঠোতে।