সাধারণ মানুষের কাজের সৌন্দর্য

যাকে ঠিক কাজ বলা যায়, আজ মনে হয়, কখনো করি নি।
যা করেছি তা নিয়ে আজকাল আমি খুবই ব্ৰিত; আমার
লোমকূপ দিয়ে কোনোদিন দরদর ক’রে ঝ’রে নি রক্ত নোনা ঘাম
হয়ে, কখনো ক্ষুধায় ভেতরে বিস্ফোরিত হয় নি অগ্নিগিরি;
ঘাম আর আগুনে বাসের অভিজ্ঞতা আমার হয় নি।

আমার শ্ৰেণীরা যা করে তা দেখেও কখনো আমি মুগ্ধ হই
নি, তাদের কাজে আমি কোনোদিন কোনো সৌন্দর্য দেখি নি।
তাদের উদ্বেগ নেই রক্তে, তাদের ভেতরে কোনো ঘাম
নেই, তাদের পেশিতে কোনো টান নেই, শীততাপনিয়ন্ত্রিত
কক্ষে আমি কোনোদিন কোনো কাজই দেখি নি।

একটি বালক ইট ভাঙছে; তার কাজের সৌন্দর্যে ভয় পেয়ে
আমি হঠাৎ থমকে দাঁড়াই, দেখি হাতুড়ির নিচে ভাঙছে সে তার
সামান্য জীবন; একটি বালিকা মেশিনে শেলাই করছে
তার অন্ধ বর্তমান, আমি ওই সৌন্দর্যে কেঁপে উঠি; দিকে দিকে
দেখতে পাই সাধারণ মানুষের কাজের ভয়ঙ্কর সৌন্দর্য।

ক্ষুধার্তরা কাজ করে; ক্ষুধার্তদের কাজেরই শুধু সৌন্দর্য রয়েছে,
যা জীবনের মতোই ভয়ঙ্কর; আলিঙ্গন চুম্বন সেতারের ঝালার
থেকে অনেক সুন্দর ট্রাক থেকে ইট কাঠ বালু নামানোর
দৃশ্য; প্রচণ্ড সুন্দর ঠেলাগাড়ির পেছনে একজোড়া পায়ের দৃঢ়তা-
ঘাম আর ক্ষুধা আর রক্ত থেকে জন্ম নেয়া আশ্চর্য সুন্দর।