তোমাকে ছাড়া কী ক’রে বেঁচে থাকে

তোমাকে ছাড়া কি ক’রে যে বেঁচে থাকে জনগণ!
তুমি যার পাশে নেই কী উদ্দেশ্যে বেঁচে থাকে তারা?
আমি, কিছুতেই, বুঝতে পারি না কীভাবে তোমাকে ছাড়া
-উদ্দেশ্যবিহীন- বেঁচে আছে এ-দুর্দশাগ্রস্ত গ্রহের
দেড় হাজার মিলিয়ন মানুষ। অনাহার, রোগ, শোক,
খরা, ঝড়, ভূমিকম্প আর ব্যাপক মানবাধিকারহীনতায়
তারা যতো কষ্ট পায় তারও বেশি কষ্ট পায়
তোমার অভাবে। তুমি যার পাশে নেই মেয়ে, সে-ই ভোগে
রক্তচাপে হৃদরোগে। দেশে ও বিদেশে যে শ্রমিকেরা
এতে ক্লান্ত তার মূলে তোমার অভাব, আর শতাব্দীপরম্পরায়
কৃষকেরা যে দুরারোগ্য হতাশায় ভোগে তারও কারণ
তুমি পাশে নেই কৃষকের। আমলার অনিদ্রার মূলে তুমি,
আইনশৃঙ্খলারক্ষীবাহিনী যে সামান্য উসকানিতে এতো হিংস্র
হ’য়ে ওঠে তারও কারণ তুমি, মেয়ে, তাদের মুখের
দিকে চোখ তুলে তাকাও নি কখনো। মন্ত্রীরা বিমর্ষ-
কারণ তাদের তুমি একযোগে প্রত্যাখ্যান করেছো।
সে তো অন্ধ যে তোমাকে অন্তত একবার চোখ ভ’রে কখনো দেখে নি।
যার সাথে অন্তত একবার তুমি কথা বলো নি, সে কখনো
শোনে নি সুর অথবা গান। তুমি যার মুঠো নিজের মুঠোতে
একবারও ধরো নি, সে কখনো জীবনচাঞ্চল্য আর
হৃৎপিণ্ডের স্পন্দন বাঝে নি। আার যে তোমাকে ডানা-মেলা
ইস্কুটারে শহর পেরিয়ে নিয়ে একঝোপ কাশের গুচ্ছের পাশে
দু-হাতে জড়িয়ে ধ’রে অসাধারণ সূর্যাস্ত দ্যাখে নি,
সে কখনো অমরতার আস্বাদ পাবে না।