তোমার সৌন্দর্য

তোমার তৃতীয় চিঠি পাটিগণিতের পাঁচশো পৃষ্ঠার ডাকবাক্সে পাওয়ার
পাঁচ দিন পর, মাত্র ষাট গজ হেঁটে, পাঁচটা লেটার-স্টারের
ভয়ংকর ঝলকানি পনেরো বছরের দুর্দান্ত বর্বর লাল রক্তে গেঁথে
তোমার ও সন্ধ্যার ও বিংশ শতাব্দীর সপ্তম দশকের মুখোমুখি দাঁড়ালাম।
একফোঁটা তলহীন জল তোমার গোলাপি গণ্ডে, লাল তিলটার পাশে,
তোমার ও সমগ্র বিক্রমপুরের মতো টলমল করছিলো।
দেখে মনে হলো তুমিই
সুন্দর।

বন্য বাতাসে, যেনো রঙিন রুমাল, ঝলমলালো আমাদের ষোলো বছর।
সূর্যাস্তরঞ্জিত পদ্মাপারের নারকেলগাছগুলোকে আমূল শিউরে দিয়ে একটা
মোগলাই তলোয়ারের মতো মারাত্মক ঝকঝকে জিহ্বা
ঘজঘজ ক’রে যখন ঢোকালে মুখে, মনে হলো
তুমিই সৌন্দর্য।

সমস্ত দুপুর কাঁপলো থরোথরো, বাড়িটা ট’লে পড়লো তেতলা মাতাল।
সিল্ক খুলে মেলে দিলে গুপ্ত সিল্ক্‌- মুখে গুঁজে দিলে
সোনাভরা লাল তিল- স্বপ্ন-সিল্ক্-
মনে হলো তুমি পৃথিবীর
অন্তিম সৌন্দর্য।

পৃথিবীর একমাত্র সন্ধ্যাবেলা যখন হনন করলে তোমাকে-আমাকে
জন্মান্ধ দু-চোখ অন্ধ দেখলাম তুমি আততায়ীর
তীক্ষ্ম ছুরিকার ঝিলিকের চেয়েও
সুন্দর।

যেদিন আমাকে তুমি ক্ষিপ্ত লাভার মুখে ছুঁড়ে ফেলে চ’লে গেলে
তাকে দিলে স্বর্ণখনি, সবচে স্বর্ণাঢ্য ভূমি খুঁড়েখুঁড়ে
যখন ঢুকলে সে তোমার ব্যাপক দীর্ঘ
সোনার খনিতে, তোমার মুখের
শিহরণ জংঘার আন্দোলন
দেখে মন্দে হলো এতো
সৌন্দর্য আমি
দেখি
নি।