পাগল

ওগো পথিক, ঐ ত তোমার সম্মুখে ঐ পথ;-
এড়িয়ে নগর, পেরিয়ে নদী, ছাড়িয়ে পর্ব্বত,
এই পথই ত গেছে বয়ে সুদূর সাগর-তীরে
বেলাভূমির বালির বুকটি চিরে’!
এই পথই ত গেছে হোথায় হাটের পাশটি দিয়ে,
বেচাকেনার হাজার বোঝা নিয়ে-
পার-ঘাটাটির একটু বাঁয়ে বেকে;
টেরই পাবে দেখে’,
আরো অনেক হাটের যাত্রী সেদিক পানে চলে-
কেউ-বা একা কেউ-বা দলে দলে;
-সেথায় তুমি যাচ্ছ বুঝি কাজে?
ওকি পথিক, উন্মনা যে হ’লে কথার মাঝে?
না-হয় সেথায় নাই-বা গেলে- এই পথেরি ধারে,
একটু আগেই দেখ্তে পাবে, কত-না লোক চলছে সারে-সারে
পূজার ডালা সাজিয়ে ফলে-ফুলে,
জগন্মায়ের জয়ধ্বনি তুলে’;
মোটেই তোমায় খুঁজে নিতে হবে না মন্দির-
এত লোকের ভিড়!
-ও কি, আবার! সেথাও যেতে নাইক বুঝি মন!
আচ্ছা শোন’, সোজা চলে’ আরো খানিকক্ষণ,
দেখ্বে একটা মস্ত বড় বাড়ী-
রাস্তা হ’তে রসি দুয়েক ছাড়ি’;
চারধারে তার ঝাউয়ের গাছের প্রাচীর দিয়ে ঘেরা;
-চিন্তে পারবে, ঘুরছে ফিরছে চেঁচাচ্ছে ছাত্রেরা-
সেইটা তোমার নব্য-ন্যায়ের বিরাট বিদ্যালয়।
-চুপ করে যে রইলে বড়- সেথাও তবে নয়!
তবে তুমি যাচ্ছ কোথায় আর?
তার পরে ত প্রকাণ্ড মাঠ- পাহাড়তলীর ধার-
সে যে অনেক দূরে;-
সন্ধ্যা হয়ে আসবে তোমার মাঠ্টা যেতে ঘুরে’!
সেথায় যত ইতর লোকের বাস-
চাষী, মজুর, ছোট কাজেই ব্যস্ত বার মাস!
কারো ঘরে আপ্নি খাবার অন্নটুকু নাই-
মাথা গোঁজার মিল্বেনাক ঠাঁই।

ওকি! কোথায় চল্লে তাড়াতাড়ি?
সত্যি সেথায় যাবে নাকি! এযে দেখি, বিষম বাড়াবাড়ি-
আরে আরে, শোন’-
চল্ল তবু! নিশ্চয়ই এ পাগল হবে কোনো!