এ-পৃথিবী তার তরে

এ-পৃথিবী তার তরে আর উপযুক্ত নয় জেনে
অনেক গভীর সকালবেলা
অন্য এক কুয়াশার ঘুম থেকে উঠে যেন- অবিনাশ ঘোষ-
রৌদ্র আর মানুষের ভিড়ে এসে আর-এক বার তবু
জেব্রা’র মতো ডোরাকাটা অনির্বচনীয় অভিমান
পেয়ে যেত;
ঈষৎ হলুদ দুই চোখ তুলে বিচক্ষণ ভাবে এক বার
বীক্ষণ করিত সব
মুহূর্তেই নাসিকা উঠিত স্ফুরে
লেজ যেন মন্থরা’র ঝাড়ুর মতন রোমহর্ষে নেচে উঠে
সব-শেষ কুয়াশাকে আকাশের থেকে ঝেড়ে ফেলে
ঝাঁপাত কয়েক বার
চারখানা খুর এসে একটি কেন্দ্রের পরে
কোনও এক রবিপক্ক অবিরাম কেন্দ্রের উপরে
উন্মত্ত উদ্রেকে যেন বিদ্যুতের মতো নেচে নিত
তার পর স্মরণীয় দীর্ঘ দিন- মৈথুনের- তৃণভক্ষণের
চারি-দিকে অগণন জেব্রা’র ভিড় জ’মে গেছে
কারু ঘাড়ে ফোড়া- কেউ শিশু- কেউ-বা স্থবির
সকলেই যেন মৃত: তাহাদের ছায়া-অবয়ব নিয়ে
কাজের গতিকে আজও কাননগু’র মতো ঘুরিতেছে
সকলেরই বুকে লিপ্ত কেশরীর নখরের মতো
জটিল টোটেম এক রয়ে গেছে
এরা সব
প্রান্তরের অই পারে প্রান্তরের দুরূহ মেঘের দিকে
(কন্ধকাটা চলিতেছে যেন- এই রৌদ্র- এই তৃণ- কলরব
হাড্ডিসার- অর্ধভুক্ত- মৃত বন্ধুদের টিটকারি চারি-দিকে)
নিবিড়- নিশ্চল এক টোটেমের অন্ধকারে- সকল সময়ে
প্রান্তরের অই পারে প্রান্তরের জমাট মেঘের দিকে চলিতেছে।