আবার হেমন্ত-দিন এল

আবার হেমন্ত-দিন এল তার নীরবতা নিয়ে
অথবা আমাকে আমি হেমন্তের অনুচর ব’লে
জেনে নিয়ে গভীর ভিড়ের মাঝে- তবুও পাথরে
ব’সে আছি: নিঃস্বার্থ সূর্যের থেকে আলো
প্রান্তর নদী ও পাখি সঞ্চারিত ক’রে
তবুও গভীর ভয় জেগে থাকে মানুষের প্রাণে
সে তার পাতাললোক আপামর বিভীষিকা দিয়ে
বিস্ফারিত ক’রে রেখে অবশেষে দশম দুয়ারে
তালা এঁটে পৃথিবীর আলোর ভিতরে
চ’লে এল- তবুও বিবর্ণ এক নিরীহ পাখির
হৃদয়ে অজ্ঞাত ভয়- নগরীর স্তম্ভের উপরে
মহাপুরুষের উক্তি আপনার কথার গরিমা
নিঃস্বার্থ সত্যের মতো মনে ক’রে দু’-এক নিমেষে
জনতার পথ থেকে অন্ধকারে একা ফিরে এসে
কথা ভাবে- অপরূপ সিঁড়িলোক দিয়ে
যত দূর স্বর্গে ওঠে, পাতালের ঘুরোনো আঁধারে
ততখানি নেমে যায়।
কোথায় স্তব্ধতা, শান্তি, হেমন্তের নিজের জিনিস?
এই সব কথা ভেবে প্রাজ্ঞ নাগার্জুন
বহু দিন হেঁটেছিল- প্রশান্তি সে চায় নাই ব’লে
হেমন্তের মাঠে গিয়ে নির্মম পাথরে
অথবা নদীর জলে অব্যয় শান্তিকে
খুঁজেছিল- কোনও এক রমণীকে ভালোবেসে আমি
দেখেছি বাগর্থ যেন ব্যবহিত হয়ে
অর্থ নিয়ে মেধাবিনী পাখিনির মতো
ভাষার অঙ্গারে ফেলে আমাকে, সে মেঘে
মিশে গেল- তাই আমি ভারতীর আগুনের ঠোঁট
স্পর্শ ক’রে কান পেতে শুনি দূর বাতাসের থেকে
রতির বিলাপ জাগে- আহা, প্রেম, জ্ঞান
অথবা নিবিড় শান্তি- হেমন্তের নিজের জিনিস
কা’কে আমি তুলে নেব- সারা-দিন লোক-সেবা ক’রে
অনেক শতাব্দী-চক্র ফুরায়েছে বুদ্ধ ও জাতক
তবুও অমিতাভ-কূট জ্ঞানী শুধু- নারীর প্রেমিক
হোয়েল্ডারলিন- জ্ঞান, প্রেম, সেবা
একটি আকাশে গিয়ে কোন নীলিমায়
মিশে আছে নাগার্জুন- সে কোন নরকে
সম্মুখে অবার-কাম তবে
পরিক্রমা শুরু হবে আর এক বার
পরিক্রমা শেষ হয়ে রবে।