আজ এই ভোরবেলা

আজ এই ভোরবেলা মৃত আর আধো-মৃত দেশের ভিতরে
মাঠের ঘাসের ‘পরে শরীরের ছায়া ফেলে রেখে
মনে পড়ে কারা-কারা নেই আজ কাছে
নিসর্গ অনেক গুণে জ্ঞানময় হয়ে তবু এমন নীরব
অতীব নীরব এত- ভোরের পবিত্র রৌদ্রে ব’সে
মনে হয় সেই সব বিলুপ্ত জীবন
অজ্ঞান লোষ্ট্রের মতো- এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।
তবু তারা যত দিন বেঁচেছিল- ভেবে দেখে নিলে
পৃথিবীকে মনে হত প্রভাতের হ্রদের মতন
আমিও দেখেছি সব অনুভব ক’রে

হ্রদের জলের মধ্য-পথ থেকে সর্বদাই তিন ধনু দূরে
যত দূর জল যায় মানুষের সাবলীল চোখ
যেতে চায়- তবুও চোখের দৃষ্টি ছেড়ে দিয়ে জল
চ’লে গেছে;- সাত জন শ্বেতকায় নারী-পুরুষের মতো হাঁস
জলকে সূর্যের কাছে- আরও কাছে- নিয়ে গেছে ব’লে
(সুদূরে সূর্যের কাছে অশরীরী হয়ে গেছে ব’লে)
সেই হ্রদ সূর্যের ভিতরে গিয়ে মিশে যায়- সেই সব পাখি
অদৃশ্য জলের মাইল ছেড়ে দিয়ে এক-আধ বার
ক্বচিৎ গুগলি খেতে নেমে এসে শামুকের মতন মলিন
হ্রদের অপর অংশে (ভয়াবহ ভাবে সাদা মেঘের মতন
সাদা নমুনার মতো দেখা দিলে পিছনে আকাশ
নমুনার মতো নীল- একে-একে ঢের দার্শনিক)
আঁধার রাত্রির মোম নিভে গেলে ভোরের বাতাসে
নীরবে আকৃষ্ট হয়ে দেখে গেছে- তার পর অন্ধকার হলে
টেবিলের ‘পরে মোম জ্বালায়েছে- প্রকাণ্ড সূর্যের
কোলের উপরে কালো সৌরকলঙ্কের দৃষ্ট প্রতিভায়
এই সব দার্শনিকের তৃপ্তি।
কোথায় তবুও সেই রাজহংসী, হাঁস?