আজ এই ভোরবেলা

আজ এই ভোরবেলা ছড়ায়ে রয়েছে সাদা সাধারণ ধারণার মতো
যেই সব দিন তুমি জেনেছিলে এক-দিন- তাদের মতন।
কোথাও দ্বিরুক্তি নেই।
অনেক বছর পার হয়ে তুমি আজ
যদি এই সকালকে দেখে যেতে এ-জায়গায় এসে;
যেমন ঘুমায়ে আছ কোনও স্থানে সে-রকম অবিকল সত্যের নির্দেশে।
যদিও একটি যুগ কেটে গেছে- তবুও সময়
স্থানান্তরিত হয়ে যায় নাই- কোথাও হুবহু এক চুল
তেমনই আঞ্জির-গাছে মাখনের মতো সাদা ফুল
এখানে ঘাসের ‘পরে শুয়ে আছি ব’লে বেজি অনধিক ভয়
পেয়ে যায়- আমার শরীর এই সমবেত রোদের ভিতরে
অপরের দেহ ব’লে যদি মানবাত্মা তাকে নিঃসংশয় করে
এমন সন্দেহ তবে তবুও নতুন কিছু নয়

(তবুও শরীর ছিল পৃথিবীতে আরও ঢের
প্লেটো’র মতন সব দার্শনিকদের
মুলতুবি মামলার নিবিড় বিষয়।)

সমস্তই পৃথিবীর ধূসর জিনিস।
চারি-দিকে মহিরুহ থেকে ঢের ক্ষুদ্র ব্যস্ত ফুল
ঘাসের ভিতরে প’ড়ে ডুবে যায়- এ-রকম ডুবে যেত সেই দিনও ভোরে
কোথাও শিশির নেই- শিশিরের মতো শব্দ ক’রে
মাথার উপরে কালো আঁকাবাঁকা ডাল
পরস্পরের সাথে মিশে গিয়ে তেমনই সকাল
এখনও ধারণা করে- সকালবেলার রোদে তাদের গায়ের ছাতকুড়ো
আলোকিত হয়ে ওঠে, ঘুম ভেঙে কুকুরেরও ঠিক এ-রকম খাড়া হয় কান
ডালে ডালে প্রতিটি হলুদ পাখি জানে আজও কতখানি ধান
কতটুকু চাল দেয়- কী ক’রে-বা পৃথিবীর পাখিদের স্বতন্ত্র সম্মান
বেঁচে থাকে- কী ক’রে তবুও তারা তার পর গান
গেয়ে যায়;
অবহিত হয়ে থেকে কোনও এক সঙ্গীতের স্কুল
কী ক’রে বানাই তবু- আমি আজ দারুময়- তোমার শরীর সব স্থূল
অনুষঙ্গ থেকে খ’সে মিশে গেছে ছায়ার ভিতরে
যেমন সত্যের মতো কে আজ অনপনেয় ভাবে অনুভব করে
জীবনকে সে-রকম।
বিকেলে গাছের ছায়া বেড়ে গেছে- মিশে যাবে ব’লে
অদ্ভুত বৃত্তের থেকে নেমে এসো তুমি আজ
অদ্ভুত বৃত্তের থেকে নেমে এসো অগণন হে হলুদ পাখি
চাঁদের শিঙের কাছে একটি একাকী তারা বৃষ আর রূপসির পরিবেদনার মতো না কি?