আজকে রাতে

তার সাথে আজ সাত-আট বছর পরে- অঘ্রানে
কলকাতার এই টিউব আলো নিয়নদীপের রাতে
দু’-চার মিনিট দেখা হ’ল- কথা বলা হ’ল:
ঘরে ফেরার আগে কিছু সময় কাটাতে।
স্বচ্ছ ধ্ৰুব সহজ স্বভাব-কথা
বলা হলে ভাবছি ভালো হ’ত;
কথা আরও গভীর ভাবে চেতন হ’ত যদি;
শব্দ কথা ভাষা- সবই সেই নারীকে লক্ষ্য ক’রে ব’লে
সফল হওয়া সহজ- তবু প্রতীক্ষা চাই মৃত্যু অবধি।
*
আজকে রাতে তোমায় আমার কাছে পেলে কথা
বলা যেত; চারি দিকে হিজল শিরীষ নক্ষত্র কাশ হাওয়ার প্রান্তর।
কিন্তু যেই নিট নিয়মে ভাবনা আবেগ ভাব
বিশুদ্ধ হয় বিষয় ও তার যুক্তির ভিতর;
আমি সেই ফলাফলের ভিতরে থেকে গিয়ে
দেখেছি ভারত লণ্ডন রোম নিউইয়র্ক চীন
আজকে রাতের ইতিহাস ও মৃত ম্যামথ সব
নিবিড় নিয়মাধীন।

কোথায় তুমি রয়েছ কোন্ পাশার দান হাতে:
কী কাজ খুঁজে;- সকল অনুশীলন ভালো নয়;
গভীরভাবে জেনেছি যে-সব সকাল বিকাল নদী নক্ষত্রকে
তারই ভিতর প্রবীণ গল্প নিহিত হয়ে রয়।
*
ক্রমেই বয়স বাড়ে- সবই ছড়িয়ে পড়ে নশ্বরতার দেশে।
বৃষ্টি বাতাস হলুদপাতা ছাতকুড়ো ঘুণ মাকড়সা-জাল এসে
বলছে: ‘আরও কঠিন আঁধার নেমে পড়ার আগে
আমরা এলাম; কোথাও কিছুই নেই;
একটি শুধু মূর্খ আছে মানব ইতিহাসে
চঙ্গে চ’ড়ে চেয়েছে নীল আকাশ ধরবেই;
সারাটা দিন শিমুল তুলোর মতন শত সূর্যে উড়ে তুমি
একটি বীজচিহ্ন নিয়ে মাটিরই ক্রীড়াভূমি।’

বললাম আমি: ‘শিশির আলো নক্ষত্র জল মনের উদ্দীপন
অন্ধকারের দিকে টানে ইতিহাস ও দার্শনিকের মন,
দেখেছি আমি: তবুও স্বাদ অনেকরকম- দেখেছি মানুষ অসীম রগড়ে
উত্তেজিত হ’য়ে অপার গোলকধাঁধায় ঘোরে।
তবুও মহাজিজ্ঞাসা ও অপার আশার কালো
অকূল সীমা আলোর মতো;- হয়তো সত্য আলো।’