এক দিন মনে হয়েছিল

এক দিন মনে হয়েছিল সব যুবক ও তরুণীকে
রাবিশের ফুটপাতে সাদা, নীল, হরিদ্বর্ণ পাখির মতন
কোনও এক সমুদ্রঘড়ির দিকে ভেসে যায় তারা
তাহাদের অবয়বে সূর্যফেনার আলোড়ন

তাদের পিতারা সব দাঁড়ায়েছে হেমন্তের নদীর নিকটে
সুদীর্ঘ দিবস ক্লান্ত বায়ু-কুকুরের মতো ঘুরে
মৃত পৃথিবীকে পিছে প্রভাতের সূর্যে ফেলে দিয়ে
উদ্ভিতধূসর অন্ধ মাংস হয়ে নদীর মুকুরে

দেখে গেছে নিজেদের- অনুভব ক’রে গেছে অন্ধকারে
সূর্যের অকৃত্রিম অন্ধকারে নীরবে দাঁড়ায়ে
অনুভব ক’রে গেছে কী ক’রে মানুষ ক্রমে জল হয়ে যায়
মাছের শল্ক, গুল্ম, ছাতকুড়ো লেগে থাকে গায়ে

কি ক’রে শরীর ক্রমে স্মৃতি হয়ে যায়।
গার্গী, নাগার্জুন, বুদ্ধ, শেলি, প্যাসকাল-
চোখের খোঁড়ল থেকে অঙ্কুরের মতো জেগে উঠে
হয়ে থাকে পাললিক উদ্ভিদের জাল।

তাদের শিকড় দূর- দূরতর মাটির ভিতরে
আঁকাবাঁকা কঙ্কালের কঞ্চির মতন
ওলের মতন বুনো মুখ নিয়ে মৃত্তিকাকে পরিহাস ক’রে
অন্ধকারে বার করে পরিণত গাজরের স্তন।

বহুতর আলোচনা হয়েছিল পৃথিবীতে- এক দিন
অনেক মানুষ এসে বসেছে কুশনে,
তার পর কী-যে হয়েছিল- কিছু মনে নেই
জল, গুল্ম, উদ্ভিদের গলাধঃকরণে

মৃত্তিকা নিজের জুস টের পায়
মিষ্টি আলুর শীর্ণ দীর্ঘ এক দাড়ির ভিতরে
আপন জন্মের আগে বেঁচেছিল কনফুসিয়াস- কার্ল মার্কস
টিকে আছে নিজেদের মধুমান মৃত্যুর পরে।