এক দিন তারা সব এসেছিল

এক দিন তারা সব এসেছিল পৃথিবীর মরুপথ ধ’রে
পার হয়ে নোনা নদী- অবুঝ সাগর
পিঙ্গল জাহাজে ভেসে- খচ্চরের পিঠে চ’ড়ে ছুটে
কুজ্ঝটিকায় কালো ভূতের গালের ‘পরে মেরেছিল চড়

মেরেছিল- মর্মরের টেবিলের স্ফটিক গেলাস
তখন এ-পৃথিবীতে খেলা শেষ ক’রে
ঢের দিন হল চ’লে গেছে
তার পর আরও ঢের দিন গেছে ঝ’রে

প্রবীণ নগরে নেমে দেখেছিল স্তম্ভের পারে
বিমূঢ় সিংহের মূর্তি পার হয়ে গেলে
ভিতরে অনেক সাদা লোটন পায়রা ম্লান গিরেবাজপাখি
অহিফেনে অন্ধকার চিতাবাঘিনি’র সাথে খেলে।

ইতস্তত রয়েছে বিক্ষিপ্ত হয়ে বইগুলো সব।
দার্শনিকদের চোখে ক্রমেই মিইয়ে আসে তাপ
পরদায়- আসবাবে- চাঁদের মতন গোল রূপার করঙ্কে
জ’মে গেছে ধুলোর চেয়েও বেশি ধূসর গোসাপ

তাই তারা তরবারে ছেদ ক’রে দিল সব
বেলুনের মতো বড়ো মদিরার জালা হাতে নিয়ে
রক্তে আর গঞ্জনায় উত্তেজিত হয়ে
চাঁদ আর কুকুর খেপিয়ে

কাটাল সুদীর্ঘ রাত বিষুবক্রান্তির পথে নেচে
আগুনের জঙ্ঘার মতন উৎসবে
যাতে ধূর্ত, নীলাভ চাঁদের মনে হল
এইখানে দ্বৈপায়ন, ময়দানবের জন্ম হবে।

কখনও মানুষ মাথা হেঁট ক’রে থাকে সারা-দিন
হাজার বছর আগে মৃত এক সুবর্ণ ডিমের কথা ভেবে
অথবা অবাক হয়ে মনে ক’রে দরজার পর্দায় তার
যৌবনের সিঙ্গোলিন নদীর ও সিন্ধুর হাওয়া কে ফিরায়ে দেবে

অথবা যে-সব গ্রন্থ এক দিন পাওয়া গিয়েছিল
পিতৃপিতামহদের কাছে প্রিয়
সোনা’র গেলাস আজ ভাস্করের হাতে কেটে নিয়ে
কে এ-বার সে-সব পানীয়

ভ’রে দেবে সমারোহে রূপসির মতো দীর্ঘ হাতে
ভোরের উজ্জ্বল সূর্যে- রাতের নিবিড় প্যারাফিনে
তবুও সভ্যতা, প্রেম, শিল্পের মৃত্যু হয়- তামাশা ফুরালে
যদি না নতুন যুগ সঞ্চারিত হয়ে হাসে- গাধার মতন কান বিনে।