এক জন চীন-গ্রন্থকার

এক জন চীন-গ্রন্থকার- কবি- দেশের দুর্দিনে
সহসা কলম কালি ছেড়ে দিয়ে অন্ধকারে পথ খুঁজে নিল
যেইখানে সম্মুখীন কোনও পথ নেই আর
হোয়াংহো নদীর পীত, সরীসৃপ রেখা ছাড়া।
কিংবা কোনও পাহাড়কে পৃথিবীর শেষ
দেয়ালের মতো যেন মনে হয় সর্বদাই
সততই বায়ুর ভিতরে কালো পিঙ্গল পাহাড়
সৈনিকের পথের সমুখে এসে স্থির হয়
এই সব হেঁয়ালিকে তবু তার মনে হল রূপকের মতো
যেন তারা বহু দিন বিষয় হারায়ে
বস্তুর পৃথিবী থেকে স’রে গিয়ে- তবু
কোনও-কোনও মানুষের প্রাণে এসে বাঁচে
যখন এ-পৃথিবীর ঘূর্ণনের ধ্বনি ডুবে যায়
ডুবেছে শেলের শব্দে- সৃজনের কারখানা থেকে
কামান ও শিশুদের যুগপৎ উদ্গীরণ হয়
মূল আলোকের লোভে- যখন আকাশে বড়ো চাঁদ
হ্রদ, নদী, পুকুরের ঝিলের খোঁড়লে
গেলাসের জলের হাড়লে
জাপানি সৈন্যের সত্রে অসংখ্য বন্দিনী
অন্তঃসত্ত্বা চীনে রমণীর গোল পেটের মতন
ক্রমেই উর্বর হয়ে ফ’লে ওঠে উদ্ভিদের মতো তামাশায়
ভ্রূণের ভিতরে মূঢ় শিশুকেও নীরবে হাসায়
তখন দু’-এক মুহূর্ত এই প্যাঙ্গোলিন ক্যাম্পে
সংগ্রামের অবসরে গান গাওয়া যাক:
উঠে এসো টিকটিকি দেয়ালের থেকে
সবুজ সমুদ্র থেকে চ’লে এসো তুষ জাফরান শুক্তি মাছ
বায়ুর ভিতর থেকে আলো হরিয়াল
নেমে এসো দুম্বা ভেড়া অরলু পর্বতের
বনের বাতাস থেকে মোমের আলোর
সাপের গোপন শঙ্খ- লিংক্সের চোখ।
আমার সঙ্গীত চায় সুদূরদর্শিতা তোমাদের।
কোনও এক সূচিশিল্পে মানুষের সাথে
তোমরা বিভিন্ন রং;
তোমরা ছবির মতো হয়ে র’বে স্থির
এই যুগ কামানের ডেঁপোমিতে শেষ
হয়ে গেলে অন্য সময়ের ক্ষুদে বামন প্রজ্ঞায় দাড়ি তুলে
আমাদের সূচিশিল্প নেড়ে দিতে নিমেষেই অনেক শিশির
তাহার মাথার ‘পরে ঝরে- তবুও মাথার ‘পরে
ঝ’রে যায় চির-দিন- মনের বিমর্ষ গরিমায়
যদি না সে মনে করে কোনও এক মূঢ় বিদূষক
তাহার পিছনে লেগে মিছেই প্রগলভ হতে চায়।