এক অন্যরূপ প্রবীণ বিনয়

অনেক পুরুষ-নারী এক-সাথে মিলে
কোনও এক জীর্ণ দ্বার দিয়ে
হয়তো প্রবেশ করে প্রকোষ্ঠের অন্ধকারে, আলোর ভিতরে
ভালো ক’রে চেয়ে দেখো- তবু- তারা সবে পরস্পরে
হাত ধ’রে গিয়েছিল কত দূর? হাত ধ’রে কত দূর যায়
ও-পারের দ্বার থেকে বার হয়ে মরুভূর সূর্যে মিলায়
প্রতিটি একাকী প্রাণ,- পৃথক বালুকা, অগ্নি, সিলিকনে গিয়ে
হ্রস্ব মশালের মতো যে যাহার হ্রস্বতর বিষয়ে হারিয়ে।

আমরা হয়তো তবে পরস্পর মিলি এসে কোনও এক হলুদ রঙের বিন-খেতে
টিট্টিভ-পাখির মতো সন্ত্রস্ত কল্লোল তুলে দিয়ে
তবু যে-মানুষ সেই মাঠে একা করে বিচরণ
বিস্ময়ে সে মনে ভাবে কেন এ-সন্ত্রাস
এই সব পাখিগুলো কার ক্রীতদাস
একা-একা উড়ে যেতে-যেতে

যেখানে একটি সূর্য র’য়ে গেছে
সেখানে অনেক সূর্য আছে
অনেক পৃথক সূর্য, অনেক পৃথক দিন, অনেক পৃথক মৃত্যু
বহুধা বিভিন্ন অন্ধকার
একটি স্তম্ভের ‘পরে সৌরালোকে হয়েছিল সকলে মিলিত
সম্পূর্ণ সজ্ঞানে তবু;- পরস্পর মিলিত হবার
প্রয়োজন নেই জেনে চ’লে গেছে। সম্পূর্ণ সজ্ঞানে
মনস্বিনী নারীদের মতো সব মূর্ত নক্ষত্রেরা-
যে যাহার নিজ স্থানে সময়ের ঘড়ি ভুলে দিয়ে যায় বার
সংক্রামিত ক’রে রাখে উঁচু মশালের চেয়ে উঁচু শরীরের,
ব্রহ্মাণ্ডের ব্যাপ্ত অন্তঃসার।

এ-রকম প্রবাহিত হয়ে যাওয়া নিজের স্বতন্ত্র অগ্নি নিয়ে
এ-রকম প্রবাহিত হয়ে যাওয়া আপনার সবিশেষ নরকে হারিয়ে
ইহাকে জীবন বলে? এক স্থান থেকে অন্য দূরতর স্থানে
সজাগ চোখের সাদা নিষ্পলক আলোর কল্যাণে
মিলে যাওয়া? ইহাকেই প্রেম বলে।
(তোমার আমার কোনও অভিভূত, লিপ্ত প্রণয়ের মতো নয়।)
আমাদের পূর্বপুরুষেরা কোন বাতাসের শব্দ শুনেছিল?
সমসাময়িক সব মৃতদের মুখে এক অন্যরূপ প্রবীণ বিনয়।