আকাশযান

মনে হল নিবিড় আকাশযানে চ’ড়ে
অন্ধকারে তুমি আর আমি চলিতেছি
চারিদিকে পৃথিবীর খণ্ডিত নাসিকা
রাত্রি এলে মরিবার মতো লোক নাই
মরুভূর মতো শূন্যতায়।

অরন্তুদ, অজস্র মক্ষিকা তবু
রিমঝিম, রক্তিম আলোকে রুষ্ট হয়ে ফিরিতেছে
যেন কোনও অন্ধকার সমুদ্রের ধীমান মকর
তরঙ্গের কর্কশ দোলায়
তাহাদের শৃঙ্খলাকে বারবার কানা ক’রে যায়।

তুমি-আমি;
দূরে এক কালো মিনারের চূড়া
দাঁড়কাকদের আদিম জননী যেন ধ’রে আছে
জটিল নখরে মাটি
দুই ঠোঁটে, পৃথিবীর দূরবীনক্লান্ত এক ক্লান্ত নক্ষত্রকে।

আকাশযানের এঞ্জিন যেন ভীত হাড়গিলা- প্রীত-
তবু অধোমৃত
আবার দক্ষিণে ডানা টেনে ঘুরে চ’লে গেল
কোনও এক গ্রাম্য নগরের দিকে
নাচের উৎসব- শিষ্যা- পিতামহ- অফুরন্ত মাঠের
ফসল হয়তো দেখিবে ব’লে
হয়তো ল্যাম্পের আলো উঠিতেছে জ্ব’লে
অপরূপ পাণ্ডুলিপি হতেছে রচনা
শীতরাতে দস্তানার ‘পরে তার পরীদের মতো
যেন নামিতেছে শিশিরের কণা।

মাঠে ব্যাঙ- জোনাকিরা শঙ্খের ভিতরে
পনির হতেছে স্নিগ্ধ অন্ধকার ঘরে
অশুভ মানুষ যেন অরুন্তুদ বাঘ এক অদ্ভুত নীরব
ঘুমাতেছে তবু তার তন্দ্রার ভিতর
নিসর্গ কাটিছে ডোরা ঔরসের সন্তানের তরে।