এখানে বেগুনি সিন্ধু

এখানে বেগুনি সিন্ধু ধবল চাপেলি-মাছে ভরা
সেই সাগরের পরে সমস্ত দিনের নীলাকাশ
অন্তর্লীন মিস্ত্রিপুরুষের হাতে গড়া
এখানে স্বর্গের ঢেঁকি, তীক্ষ্ণ তৌল, আকাঁড়া চালের অবলেশ

আছে তবু। এখানে সিন্ধুর পারে রয়েছে সঙ্গীতকারী গাছ
এক- দুই- অগণন তারা
কোথাও তম্বুরা থেকে তাদের শাখায় এসে লেগেছে বাতাস
লাল- সাদা- জাফরান সূর্য আর কাকাতুয়া ছাড়া

এ-সব বৃক্ষের রঙে নেমে যেত হয়তো তিলার্ধ সর্বনাশ
এক চুল উঠে এসে পেয়ে গেছি কালের কিনারা
এই গান গেয়ে তারা বুনে যায় মহনীয় সময়ের ঢেউ
এইখানে ব্যাজস্তুতি করে না ক’ কেউ।

এইখানে পৃথিবীর জাদুকর ভুলে গিয়েছিল ন্যূব্জ আস্তিনের তাস
নারী ও পুরুষ এসে বেঁধে গিয়েছিল গাঁটছড়া
অনুভব করেছিল- মানুষের হৃদয়ের ভাস্বর প্রকাশ
স্বর্ণপালকের গুচ্ছে পাখি হয়ে গেয়ে ওঠে- এ-রকম দেশ।

ঢের দিন লেলিহান পৃথিবীতে সময়ের প্রয়োজনে ঘুরে
মরণের হাতে প’ড়ে গিয়েছিল অভিজ্ঞ হৃদয়
তবুও অভিজ্ঞতা আপনাকে দেয় ভেঙেচুরে
যখন আনন্দ নষ্ট হয়ে গেলে সমূহ সংশয়

জনতাকে ক্রমে নেমে যেতে দেখে নতুন হাপুরে
নিজে বিদূষক সেজে দূরে স’রে রয়
কন্যা- মিথুন- মীন- আকাশের (কমনীয়) রাশিগুলো সকল তখন
ভাঁড়ের দু’ কান কেটে ঘুরে যায়- ঘোরে ভাঁড়- তৈলচিক্কণ।

II.
জনতাকে আপনার পরমার্থ ছেড়ে দেয় সময়ের হাত এসে তবু
এখনও রুধিরে প্রামাণিক
আপনার সব কথা ব’লে গেলে এক জন দার্শনিক তবু
জলবাতাসের বিম্ব বুদবুদের মতো যেন ঠিক।

যদিও সে পণ্যসরঞ্জাম নিয়ে এসেছিল- কিছু আগে- যুগের প্রতিভূ
তবু- তার পর- তার দর্পণের প্রতিবিম্ব রুগিদের চক্ষে অলীক
এই গান ক’রে তারা গেলে যায় মরক্তায় সময়ের ঢেউ
এইখানে ব্যাজস্তুতি করে না ক’ কেউ।