এখনও বিধ্বস্ত হয়ে যাই নাই

এখনও বিধ্বস্ত হয়ে যাই নাই সময়ের চাপে
যদিও স্মৃতির ‘পরে দেগে গেছে সদ্যঃপাতী, পৌরাণিক অনেক অক্ষর
যদি কোনও সমীচীন বিচারক তৌলদণ্ডে মাপে
আমার হৃদয়ে পাবে অনেক অদ্ভুত বায়ুস্তর

যেন এই জীব-ব্রহ্ম-অভেদ জীবন
বেলুনের মতো যেত লুব্ধকে উড়ে
যদি-না নদীর জলে আবদ্ধ পাহাড়,
বালির বিছানাটাকে খেত খুঁড়ে-খুঁড়ে

আজ তবু জীবনের অন্য কোণ থেকে
উঠে এল নিবিড় বাতাস
যখন তোমার সাথে কুড়ি বছরের পরে দেখা হল, সরোজিনী
দেখা হল কুড়ি বছরের পরে তোমার আমার, অবিনাশ

কিন্তু তবু সরোজিনী নৈশ বিদ্যালয় খুলে
অন্য সব জননীর সন্তানকে নিয়ে
তাদের নাকের জলে- মোমের আলোয়
অপার্থিব হীরক জ্বালিয়ে

সুরসা রাক্ষসী আজ রাত্রির শিশুদের কাছে
শিশুদের ধারণার ভূতগুলো- উর্বশীকে-
কিংবা কোনও মনস্তাত্ত্বিকের হাতে দেওয়া যায় তুলে
যুবাদের হৃদয়ের খাদ্য যাহা চির-দিন- হয়তো তা হয়ে যায় বিষ
যখন সে দু’-একটি বাছুরের মুখে এসে বিড়ালের মতো ওঠে ফুলে

স্তব্ধ থাকে অবিনাশ প্রান্তরের পথে
আমার প্রগলভ কথা শুনে
মনে হয় মিহি ক’রে ন্যূব্জ নখ কেটে দিতে গিয়ে
আমি তার আত্মা কেটে ফেলেছি নরুনে

পঁচিশ বছর আগে বন্ধু ছিল এরা সব
গেলাসে জলের ঘ্রাণে নেউল-ধূসর ভূত নড়ে
তবুও এখন সূর্য মিথুনে নেই ক’ প’ড়ে, আহা, আর
চ’লে গেছে বিছার ভিতরে

যেন স্পষ্ট প্রয়োজনে জন্মেছে আঁচিল কতগুলো
এই নারীটির ম্লান মুখের মাংসপেশি ঘেঁষে
চেয়ে দেখি যেন বুধ- বৃহস্পতি- শনৈশ্চর পুলস্ত্য- পুলহ
কঠিন দেবতা সব ব্রহ্মা’র আদেশে

ব’সে আছে মহিলার বিশ্রুত গালের উপর
কুড়ি বছরের স্রোতে অনেক অদ্ভুত জল গিয়েছে গড়িয়ে
কৃত্তিকা’র চাঁদ পেঁচা- মাড়ি বার ক’রে তারা হাসে অনর্গল
সমস্ত নকল দাঁত ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে।