একটি মোমের বাতি

একটি মোমের বাতি হাতে নিয়ে ধবল চাদরে তার শীর্ণ দেহ ঢেকে
শ্লথ সাদা উড়ানির স্নেহে তার মাথা ঘিরে ঘোমটার মতো
সেই দীর্ঘ যুবককে বক্তৃতার থেকে লিপ্ত মাথা তুলে দেখিল অনেকে
রাতের বিমূঢ় ঘরে শেষ গল্প ফেলে রেখে আমাদের তরে
ধীরে-ধীরে চ’লে যায় সূর্যমন্দিরের দিকে প্রখর রগড়ে
সে-ই ধূর্ত কুয়াশার গল্প তবু শুরু করেছিল প্রথমত

বাহিরের অন্ধকারে কোথায় সে চ’লে যায়- হয়তো-বা জানি
তেতলার সিঁড়িটার শিঙের মতন বাঁকা ধূসরতা ধ’রে
ডাইনির নিঃশ্বাসে হেসে তার মোমবাতি হলুদ উড়ানি
উড়ায়ে-উড়ায়ে গেল- গভীর বেতালসিদ্ধ প্রাণ
তবু সে ভূতুড়ে নয়;- ক্যামেরায় ও-পারের আবর্তিত মুখব্যাদান
ধরিবে সে;- অম্ল জ’মে গেছে রক্তে বহু দিন- অনেক স্বর্গীয় বই প’ড়ে

বই প’ড়ে শুধু, আহা;- অরুচি জমেছে তার দর্শনের কবিতার ঘাসে
উল্টো গাধার পিঠে চ’ড়ে যেন অথর্ব হেঁয়ালি
সৃষ্টি করে এরা সব,- সাদা দাড়ি নেড়ে যেন জ্যোতির্ময় কাঁচের গেলাসে
অলকার খানিকটা নুন আর টমাটো’র রস নেয় চেখে
সমীর বুঝেছে আজ সেই সব ভাইটামিন থেকে
উটপাখি পায় তার মাথা গুঁজিবার মতো পাঁচ সের প্রিয়তম বালি

তেতলার লাইব্রেরি-ঘরটাকে গহন গভীর
সমুদ্রের মতো যেন মনে হয় এইখানে নিচে ব’সে থেকে
সেখানে মোমের আলো সারা-রাত জ্বলিতেছে হাড়-জিরজির
একটি নাবিক একা চালাতেছে কমঠের মতো এক আড়ষ্ট জাহাজ
আমাদের হাতে তবে আজ রাত সাঙ্গ ক’রে দিক তার কাজ
এ-বার ঘুমাতে হবে লোম-কম্বল টেনে দার্শনিক দাড়িগুলো ঢেকে

সব বাতি নিভে গেছে- চ’লে গেছি যে যাহার শয্যার ভিতরে
আঁধার প্রসার নিয়ে একাকী গুবরে এক উড়িতেছে- যেন তার সূচ আর (কোনও দিন) হবে না ক’ ফাল
মরুজয়ী সৈন্যরা দিয়েছে খেদায়ে তারে- তারাদের মুমূর্ষুর ঘরে
অদ্ভুত সংঘর্ষে এনে বলিতেছে: খানিকটা জল দাও কেউ
গোবি মরুভূর গর্তে- নাও পাখি- এখনও রয়েছে এক ঢেউ
চুরুটের ঘ্রাণই শেষ প্রণিধান? বলো দেখি লাদকের লামা’দের কাল!