আলোকস্তম্ভ

কোথাও আলোকস্তম্ভ র’য়ে গেছে সমুদ্রের জলে।
নক্ষত্রেরা বিস্ময়ে বিভোর হয়ে আকাশের তলে
চেয়ে থাকে; স্তম্ভের প্রকোষ্ঠে রেখে প্রায়ান্ধ মানুষ
সাগরে অসংখ্য পোত চালায়ে নিতেছে দরায়ুস।

ধূসর গাধার পিঠে- তবুও গাধার থেকে ফিকে
মূর্খ এক ব’সে আছে শিষ্ট রূপসিকে
কোলে ক’রে। মনীষী ব্রহ্মাণ্ডে মাপে বিচ্ছেদের মানে।
আমাদের প্রেম, শান্তি, সৌন্দর্য এখানে।

এইখানে হেমন্তের অন্ধকারে তিত্তিরাজগাছের ছায়ায় মনে হয়
পৃথিবীর নীচে সব অন্তরীণ ভূত কথা কয়:
‘যত বড়ো হোক না ক’ অন্ধকার, ক্বাথ
সৃষ্টির ভিতরে তবু কিছুই সুদীর্ঘতম নয়।’

ভোরবেলা নগরীর বড়ো রৌদ্র হয়ে ওঠে অধিক বিশাল;
ভবঘুরে ভিড় তবু পদে-পদে চলে
ভুল ক’রে- নীলিমার নীচে ব’সে থেকে;-
যেন এই রক্ত, ভুল, গুনাগার সৃষ্টির কথা চির-কাল।

যতই বৃহৎ আরও হোক না ক’ রসাতলে ভূতেদের রাত:
সৃজনের ঘুরুনিতে সেই একঘেয়েমির ধাত
নিজেকে নতুন করে;- সৃষ্টির দীর্ঘতম নীলিমার দিনে
আমাদের নগরীর ধোঁয়া শুধু সাড়ে-তিন হাত।