আমাদের সচেতন মনে

কোথাও আবেগ তবু রয়ে গেছে- হয়তো-বা আমাদের সচেতন মনে
ধূম্র চাদরের মতো শতাব্দীর মেঘ এসে ঢেকে দেয় তাকে
যেখানে প্রান্তর ছিল, যেখানে প্রান্তর আছে, সেইখানে সোনালি বালির
মরুভূমিদের দেহ স্পষ্ট ব’লে মনে হয়-
স্পষ্টতর সেই সব মৃত মাস্টোডন কঙ্কালের ভিড়
কোথাও প্রভূত চিন্তা রয়ে গেছে পশ্চিমের ফিরোজা সূর্যের
বড়ো ঐশ্বর্যের মতো প্রেমে- আজও প্রেমে- মানুষের মনে
গোপনীয় নাড়ির মতন যেন জন্তু-দেহে- সান্ত্বনার জননীর মতো
শরীরের নিভৃত কোষের পিছে- সকল ধমনী, রক্ত, শিথিল স্বপ্নকে
সার্থকতা দিয়ে যায়- মানুষের আগাগোড়া সমস্ত আবহমান
পাণ্ডুলিপি নিয়ন্ত্রণ ক’রে যদি কোনও এক ভোরে
সমুদ্রের তীরে যাই, একটি অরণ্য দেখি, এক জন অকৃত্রিম, নষ্ট মানুষের
চোখের গুহার দিকে চেয়ে থাকি- তা হলে সকল জল
খুলে যেতে পারে সব নির্ঝরের: যেইখানে সরীসৃপ-স্লাইম
ঘোঁট হয়ে- অবিবেক পিরামিড- কঙ্কাল রয়েছে

‘খুলে যেত যদি’- তবু মনে হয় এক দিন খুলেছিল, হে যুগপ্রস্তর,
অথবা যেতেছে খুলে- ধীরে-ধীরে- অবিরাম সংগ্রামের মুখোমুখি
সিন্ধুর সৈকতে রপ্ত লোষ্ট্রেরাও বুঝে ফেলে কখনও-কখনও
তাহারা নিজের চেয়ে মহত্তর।
আহ্নিক গতির রোলে পৃথিবী ঘুরিতে গিয়ে আপনার ময়
নিরাময় অক্ষরের লিপিদের চক্ষুষ্মান ক’রে দিয়ে যায়
সহসা সূর্যের মুখে, চকিত সমুদ্রে, নীল পাহাড়ের আকস্মিকতায়
ভিখিরির ও প্রেমিকের, সম্রাটের মুখে যেই ব্যবধান রয়ে গেছে
তা নিয়ে ভাঁড়ের গল্প তখন থাকে না আর ক্ষুরধার।