আমি যদি হতাম

আমি যদি হতাম বনহংস;
বনহংসী হতে যদি তুমি;
কোনও এক দিগন্তের জলসিড়ি নদীর ধারে
ধান-খেতের কাছে
ছিপছিপে শরের ভিতর
এক নিরালা নীড়ে;

তা’হলে আজ এই ফাল্গুনের রাতে
ঝাউয়ের শাখার পেছনে চাঁদ উঠতে দেখে
আমরা নিম্নভূমির জলের গন্ধ ছেড়ে
আকাশের রুপালি শস্যের ভিতর গা ভাসিয়ে দিতাম-
তোমার পাখনায় আমার পালক, আমার পাখনায় তোমার রক্তের স্পন্দন-
নীল আকাশে খই-খেতের সোনালি ফুলের মতো অজস্র তারা,
শিরীষ-বনের সবুজ রোমশ নীড়ে
সোনার ডিমের মতো
ফাল্গুনের চাঁদ।
হয়তো গুলির শব্দ;
আমাদের তির্যক গতিস্রোত,
আমাদের পাখায় পিস্টনের উল্লাস,
আমাদের কণ্ঠে উত্তর-হাওয়ার গান!

হয়তো গুলির শব্দ আবার:
আমাদের স্তব্ধতা,
আমাদের শান্তি।
আজকের জীবনের এই টুকরো-টুকরো মৃত্যু আর থাকত না:
থাকত না আজকের জীবনের টুকরো-টুকরো সাধের ব্যর্থতা ও অন্ধকার;
আমি যদি বনহংস হতাম,
বনহংসী হতে যদি তুমি;
কোনও এক দিগন্তের জলসিড়ি নদীর ধারে
ধান-খেতের কাছে।