আমরা তাদের ডাকি

যাহাদের মুখ ক্রমে দীর্ঘতর হয়ে যায় বহুতর চিন্তার ভিতরে
কেননা কোনও কাজ কখনও সমাপ্ত হয় না ক’ এক চুল
সাগর সমাপ্তি চায় যদিও মর্ত্যের কাছে- পৃথিবীও সূর্যের পারে
তবু যারা রাত জেগে বার করে আত্মপরিতৃপ্তির ভুল
ইঞ্চি-ইঞ্চি ক’রে এক মনীষার দুরারোহ দর্পণকে গড়ে
আমরা তাদের ডাকি: চ’লে এসো অন্য এক আলোর ভিতরে।

আর যারা সমাজকে সমুত্তীর্ণ ক’রে দেবে ভাবে
সাবান গরম জলে ধৌত সব কুকুরের শৃঙ্খলায় বেঁধে
যদিও কেবল জল রিরংসার সেতুর নিচের থেকে ফেঁপে
মৃত অববাহিকার গহ্বরে গড়ায়
ইঞ্চি-ইঞ্চি ক’রে যারা চাঁদের শশকটিকে জ্যেষ্ঠা আর্দ্রা রোহিণী’র সাজে ঢেলে গড়ে
আমরা তাদের ডাকি স্মরণীয় টুপির ভিতরে।

কিংবা যারা আকাশের সিংহ বৃষ দৈত্যমণ্ডলের মতো কেঁপে
মানুষের অবমর্ষে মানুষের মুখ দেখে হয়েছিল ভীত
হয়তো মানুষ শুভ্র- হয়তো মুকুর তার মিছে
এই ভেবে নবতর প্রতীকের রচনায় রয়েছে ব্যাপৃত
ইঞ্চি-ইঞ্চি ক’রে যারা চুনা হাড়গোড় থেকে হাতি’র ধবল দাঁত গড়ে
আমরা তাদের ডাকি যখনই গাধা’র লেজ নড়ে।

যারা সব পুরাতন পৃথিবীর কয়েকটি আলোস্তম্ভ কাছে রেখেছিল
এ-যুগের কঙ্কালের করোজ্জ্বল আনকোরা রোদে
ভেবেছিল এতেও-ওতেও কাজ চ’লে যায়- যে চালাতে পারে
ভেবে-ভেবে বিদূষক সেজেছিল অব্যর্থ আমোদে
ইঞ্চি-ইঞ্চি ক’রে যারা নাকের দু’ পাশে বাম, বামেতর গোঁফ-জোড়া গড়ে
আমরা তাদের ডাকি: নিমেষেই ছাগলের দাড়ি এসে নড়ে

অথবা যাদের হাত বাতাসে বালির স্রোত স্পর্শ করেছিল
তবুও এড়ায়ে গিয়ে রয়েছিল বায়ুশকুনের মতো স্থূল
অনেক রন্ধ্রের গান শুনে তবু তারা
বুঝেছিল চালুনিকে ঢের বেশি বিষয়ে নির্ভুল
ইঞ্চি-ইঞ্চি ক’রে যারা সাড়ে-তিন হাত হয়- তিনটি বিস্তার ভাঙে- গড়ে
আমরা তাদের ডাকি আমাদের বন্দরের গোরে।