আমরাও অস্পৃষ্ট অঙ্গার

যখন প্রান্তরে লোষ্ট্র প্রাণ পায় বিকেলের স্তিমিত আলোয়
একটি অস্থির আভা, সূর্য নয়, তিন ধনু দূরে কোনও নদীর ভিতরে
পৃথিবীর শেষ মনীষীর মতো তার প্রিয় হৃদয়ের
সকল প্রতিভা ঢেলে মনের মতন ক’রে গ’ড়ে যেতে চায়
আকাশ, মৃত্তিকা, জীব, হেঁয়ালির মতো গোল আয়নার প্রতিবিম্বদের;
আমাদের হৃদয়ের বিষয়কে।-
চেয়ে দেখি সুদীর্ঘ জানালা সব
খুলে গেছে- দীর্ঘতার ব্যবহার জানে তারা- সেই
সার্থবাহদের সব প্রাসাদের; মরুর বালুকা সব তাহাদের
লক্ষ মাইল ধ’রে শান্ত, পোষা তিতিরের মতো প্রেমে
প’ড়ে আছে- অনেক অলীক সাদা পাখির আলোকক্রম এসে
নিঃশব্দ সাহায্য ক’রে চ’লে গেছে তাহাদের
যারা নীল আকাশের পরিচয় পেতে গিয়ে আজ
গড়েছে ধবল বেবিলন- এমন মহান, স্থির নির্জন সময়
যেন কেউ হৃদয়ের ‘পরে তার শীর্ণ হাত রেখে
জ্যামিতির অসমাপ্ত ধূর্ত প্রতিজ্ঞাকে
শুরু আর সীমানাকে সমস্ত অক্লান্ত পরিধির
তাহার পায়ের নিচে একটি ধুলোর বীজে পেয়ে গেল।
মিছেই তোমার প্লীহা কাজ ক’রে চ’লে গেছে এত দিন
আবহমানের সব ইতিহাস-সমাধিকে আলোড়িত ক’রে
ছবির উপরে ছুঁড়ে;- মায়াবী মন্ত্র প’ড়ে যায় যত দিন
অধীন দানব, জিন মাটির ভিতর থেকে উঠে
লবেজান হাওয়ার মতন তবু চূর্ণ ক’রে যায় এক দিন
ঘুমে ঘোর মনীষীকে- তখন গম্বুজ, চূড়া, কাপোলা, মিনার,
মানুষের ছায়াছবি প’ড়ে থাকে আপনারই প্রয়োজনে আয়ুরেখা পেয়ে
নিশিডাকে সঞ্চারিত মেধাবিনী নারীর মতন
নিজের আভার কাজ ক’রে যায়- নিজের ভ্রাতার হাত
স্পর্শ ক’রে- জলের উপর দিয়ে চ’লে গিয়ে তবু
জল প্রেম স্পর্শ করে না ক’। আমরাও অস্পৃষ্ট অঙ্গার।