আমরাও পাখি হয়ে

আমরাও পাখি হয়ে যদি শক্তিমান সমুদ্রের কোলে- দূরে-
অন্ধকার উড্ডীন বাতাসে
কোনও হৃষ্ট স্লীক জাহাজের মতো গন্তব্য ঊর্মির দিকে চ’লে যাই
সুরা তেল কয়লা ও রমণীর ঘ্রাণে স্নিগ্ধ
কোনও স্লীক বন্দরের দিকে
প্রবাসী স্বামীর মতো ফিরে আসি- চুলের কেশর নিয়ে অমায়িক সিংহের মতন
দেহের স্বর্গীয় দৌত্য নিয়ে কোনও সুবিশাল মেঘ থেকে যেন
যদি গর্ব অনুভব করি, প্রণয়ের তৃপ্তি পাই
হলঘরে বড় গোল টেবিলের ঘনিষ্ঠ ছায়ায় ব’সে রৌদ্রোজ্জ্বল জলের গেলাস নিয়ে খেলা করি
কথা বলি- কাজ করি- স্বপ্নের কুয়াশা-জাল ছিঁড়ে ফেলে
স্ফটিক আলোর মতো প্রদীপ্তিকে ন্যায়ানুগ অবতার ব’লে জেনে
বিশাল ঘড়ির মতো সুস্পষ্ট দায়িত্বে যদি সমসাময়িক শূন্যে বেজে উঠি
শরীরকে- মননকে কংক্রিটের মহীয়ান মন্দিরের মতো যদি গ’ড়ে তুলি
জীবনের নাগার্জুন মিস্ত্রি সাজি:
সব বস্তি এক দিন প্রিয় শিক্ষকের মতো মানে খুঁজে পাবে-
স্বাদ- শক্তি পাবে
ক্লান্তিহীন চোখে ভোরের আলোর মতো অকাট্য স্বচ্ছতা এনে
তবুও কুয়াশা কিছু রূপ রেখে দেয় স্মিত হেসে তাহার অন্তরে
আমাদের দিবাকরোজ্জ্বল লজিকের দিকে চেয়ে
মুখে তার সাধুবাদ ছাড়া আর কিছু নাই- জানি-
অতীতের মনীষীরা তবু যেন কোনও সচকিত চাবি ব্যবহার করেছিল
বাতাসের পাখিপুচ্ছময় অন্ধকারে
আমরাও মৃত্তিকার স্তব্ধতার ‘পরে এক-আধ বার যদি চায়ের টেবিল আনি
পৃথিবীর কোনও বলীয়ান ঘড়ি তার রুটিনের কাজ ফেলে
সময়ের নিরাকুল গুপ্তচর সেজে এই নিরালোকে আসিবে না- জানি আমি-
তবু যদি ব’সে থাকি- একা- দুই জন- তিন জন-
পৃথিবীর হৃৎপিণ্ডযন্ত্রের উপরে হাত রাখি- কান পাতি-
যদি কোনও আলোক জ্বালাই না ক’ আর
নক্ষত্রের মুখোমুখি থেমে থেকে…