বালক-কালের দিনে

যখন তাদের সাথে দেখা হত বালক-কালের দিনে
যখন তাদের সাথে দেখা হত- তবু তার পর
যখন যুবক আমি হয়ে গেছি- শহরের পথে
যখন যুগের সাথে ঘুরেছে শহর

যখন তাদের সাথে দেখা হত পুনরায়
যখন যুবক আমি নই আর পৃথিবীর পথে
অনেক আবহ গ্রন্থ মানুষকে নেড়েচেড়ে নিয়ে
স্থিরতর হয়ে গেছি দু’-একটি দুরূহ শপথে।

তখন তাদের সেই দূরতর একাকী আলোক
বহু দিন আগে স্মৃত সেই বহুরূপী জনমত
উনবিংশ শতকের নির্মিত বারিক
কিংবা এই শতাব্দীর এক-দেড় দশকের আলাদা জগৎ

তাহারা আমার কাছে তুলে দিত মুগ্ধ আপ্যায়নে
হে সময়, এই সব অকৃত্রিম, অনঘ সততা
আজও বেঁচে র’য়ে গেছে গোল পৃথিবীতে
মানুষকে অবিশ্বাস ক’রে তবু কানে-কানে কথা

ক’য়ে যায় আকাশের সাথে
গুনাগার বিপদের হিসেব খতিয়ে
নির্মল শয্যায় ব’সে অন্ধকার রাতে
এক বার থমকায়ে- তবুও দ্বিতীয় বার যায় না থতিয়ে

রক্তের নিকটে ব’সে টের পায়- সকল নদীর
জলের উপর দিয়ে তাদের খড়ম
হেঁটে যেতে চায় যদি- হেঁটে যেতে পারে
পুত্তলির কীট থেকে যেমন বেরোয় বিহঙ্গম।

এই বিশ্বাসের বলে সমীচীন হয়ে
কিছু মুষ্টিভিক্ষা দিয়ে ফেরে রাজপথে
লৌকিক পৃথিবীতে অন্ধকার এলে
অন্য এক নির্মেঘ শরতে

সর্বদাই প্রবেশের পথ র’য়ে গেছে।
অথবা প্রবেশ ক’রে বাহির হবার।
দস্যুরা চাখড়ি দিয়ে দাগ দিয়ে গেলে
সমীচীন প্রণয়িনী অন্য সব দ্বার

দাগ দিয়ে রেখে দেয়- জানে তারা- দৈব বলে বলী
তবুও আত্মাশ্রয়ে শক্তিমান- তবুও তো ধনী
গুপ্ত ধনে- সকলকে বানচাল ক’রে দিয়ে হেসে
বারংবার বন্দরেই মেধাবী তরণী।

তাহারা থামাতে জানে পুনরায় শতাব্দীর মোড়ে-
মনে হয় এই সব মানবীয় জীবনের খাদ-
তবু সব ভিখিরিরা প্রতিবাদ ক’রে বলে, ‘নয়!’
আমরা ও-রকম অন্তর্লীন আত্মপ্রসাদ

চেয়ে তবু পাই নাই- বার-বার ক্ষীণ অভিশাপে
আঘাত করেছি পূর্বপক্ষীয়ের দ্বার
তাই তাহা খুলে গেছে- আমাদের তরে
বিদ্যুতের দীপ হাতে নিজে বিনয়ের অবতার

আমাদের দিয়ে গেছে শ্রেষ্ঠ প্রতিশ্রুতি
কেননা সে একাধারে রাবণ ও রাম
প্রতি শতাব্দীর সাথে অধিক অভিজ্ঞতর হয়ে
পেতে পারে আপনার পিতার প্রণাম।