বাঙালি পাঞ্জাবি মারাঠি গুজরাটি

বাঙালি পাঞ্জাবি মারাঠি গুজরাটি বেহারি উৎকলি- আর সব সাগরপারের দেশের মানুষ
এই কলকাতায় আমরা লক্ষ-লক্ষ লোক- কোটি-কোটি প্রাণ রোজ ভোরে জাগি, অন্ধকারে ঘুমাই
এই কি শুধু? এর প্রচণ্ড রহস্যের কথা তোমাদের মনে জাগে না?
এক মুহুর্তের জন্যও কি মনে হয় না যেন সেই অতীতের এশিরিয়া মিশর আবার তাদের গল্প ব’লে যাচ্ছে
এই কলকাতায়

মনুমেন্টের দিকে তাকিয়ে বেবিলনের সেই বিরাট স্তম্ভের কথা মনে হয় না কি যার উপরে সিংহের মূর্তি ছিল?
এই শহরটাকে বেবিলন ব’লে মনে হয় না? মিশর ব’লে?

আমার কাছে এই শহরের ধুলো হাজার-হাজার বছরের
পুরোনো ব’লে মনে হয়
জানালায় এর নারী, দিঘির জলে এর মাছ, আলিসায় এর পাখি, দেয়ালে এর কীট
এক-এক সময় হেঁয়ালির মতো আমার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে।

বনলতা সেন, তুমি যখন নদীর ঘাটে স্নান ক’রে ফিরে এলে
মাথার উপরে জ্বলন্ত সূর্য তোমার,
অসংখ্য চিল, বেগুনের ফুলের মতো রঙিন আকাশের পর আকাশ
তখন থেকেই বুঝেছি, আমরা মরি না কোনও দিন
কোনও প্রেম কোনও স্বপ্ন কোনও দিন মৃত হয় না
আমরা পথ থেকে পথ চলি শুধু- ধূসর বছর থেকে ধূসর বছরে
আমরা পাশাপাশি হাঁটতে থাকি শুধু, মুখোমুখি দাঁড়াই:
তুমি আর আমি
কখনও-বা বেবিলনের সিংহের মূর্তির কাছে
কখনও-বা পিরামিডের নিস্তব্ধতায়
কাঁখে তোমার মাদকতাময় মিশরীয় কলসি
নীল জলের গহন রহস্যে ভয়াবহ
মাথার উপর সকালের জ্বলন্ত সূর্য তোমার, অসংখ্য চিল,
বেগুনফুলের মতো রঙিন
আকাশের পর আকাশ।