বায়ুর ভিতরে

আমি হাত প্রসারিত ক’রে দেই বায়ুর ভিতরে
চেয়ে দেখি লক্ষ লোক বায়ুর ভিতরে
তাহাদের ম্লান হাত প্রসারিত ক’রে
চেয়ে থাকে ইঁদুর-ধূসর, স্থির জলের শরীরে
কোনও মৃত জীব সেই জল
স্পর্শ করে না ক’।

যারা মৃত বৈতরণী তাহাদের তরে
নাগার্জুন তাহাদের নিয়ে যায় মূঢ় অনুভূতিহীন এক খেতে
আমাদের কোনও দিন মৃত্যু নাই- দূরতর বিয়োগের পথে যেতে-যেতে

চীন-পর্বতের পাশে দেবদারু- দানবের মতো
আকাশে একটি চাঁদ জ্বালে
গাভী’র শিঙের মতো আকাশে একটি স্ফুট চাঁদ
অমল আশ্চর্য সেই গাভী’র শরীরে
সৃষ্টির প্রথম থেকে বাঘিনি’র ভিড়ে
নিঃশব্দ পঙ্কিল মেঘে কোথাও নেই ক’ কোনও শিকারির ফাঁদ।

এই সব শব্দহীন শূন্যতায় শীর্ণতম কীটেরও শরীর স্তব্ধ হয়
পিরামিড’দের মতো বড়ো
আকাশের অই পারে আবলুস মেঘগুলো
ক্রূর- ক্রূরতর।



[আবু হাসান শাহরিয়ার তার সম্পাদিত ‘জীবনানন্দ দাশের গ্রন্থিত-অগ্রন্থিত কবিতাসমগ্র (২০০৮)’ গ্রন্থে এই কবিতার শিরোনাম ‘আমি হাত প্রসারিত ক’রে দেই’ যদিও পাণ্ডুলিপিতে এর শিরোনাম ছিলো ‘বায়ুর ভেতরে’। তাই ‘বায়ুর ভেতরে’ শিরোনাম হিসেবে রাখা হলো।]