ভোর

ভোর হয়…

কি যেন আমাকে দিতে চায় শেষ-রাত-
কোনও আভা, পূর্বাভাস?

হয়তো-বা শেষ-রাত আমাকে দিতে চায় তার ভোর হ’য়ে ওঠা।

নিদ্রা থেকে জেগে ওঠা পাখি
দু’-এক বার ডাক দিয়ে চুপ ক’রে থেকে
নিজ অনুক্রমিক ডাকের মধ্যকার
নীরবতা মন দিয়ে শোনে;
তার পর পুনরায় ডাকে।

তুমি দেখ শব্দ অনুক্রমিক- অস্থায়ী- কিন্তু
দু’টি শব্দের মধ্যকার নীরবতা স্থায়ী- স্থায়ী।

শেষ-রাতে কোনও ধ্বনি একটানা নয়
সব ধ্বনি প্রতিধ্বনিহীন- থেমে-থেমে ডাকে
ডাকের মাঝখানের কসমিক স্থির নীরবতা
সব ধ্বনি থেমে-থেমে- কান পেতে শোনে।

গাছে-গাছে পল্লবের মধ্যখানে শূন্য… শূন্যস্থান
রাত্রিভর জেগে থাকা মানুষের চোখ ভেদ ক’রে
গভীর আত্মার মধ্যে- বেদনার মধ্যে- ঢুকে যায়।

কোনও বাস্তবতা থেকে ছিটকে এসে জল
স্বপ্নমধ্যে ঢোকে শেষ-রাতে।

সকাল নদীতে আগে হয়।

গড়িয়ে-গড়িয়ে নদী থেকে উঠে আসা কুয়াশার
ভেপু- দশদিকে শোনা গেলে
মাটিতে, ভূমিতে, ভোর হয়…
এ-শহর কসমিক শেষ-রাত পার হয়ে
কসমপলিটন হয়ে যায়।

তখন তোমাকে ভোর,
অন্ধকার কেটে যাওয়া গভীর সুস্থতা
মানুষের জ্ঞানের চেয়ে ভিন্ন জ্ঞান, আলো,
অন্য এক সুস্থিরতা, পরম আনন্দ দিতে চায়।

তোমার ভিতরে শূন্যস্থান-
আরও বহু ভিতরের শূন্যস্থান থেকে এসে
শেষ-রাতে- ভোর-বেলা যেন পূর্ণ হয়…
যেন সত্যি পূর্ণ হয়।