বিকেলের সাদা আলো

বিকেলের সাদা আলো যখন নামিল চারু ঘোষাল’এর জীবনের ‘পরে-
বরাবরই কম কথা বলিত সে- এই বার একেবারে হয়ে গেল চুপ
যেন এক মুড়াহীন সুপুরি’র গাছ- একা- সারা-দিন- নদীর ভিতরে
ছায়া ফেলে আকাশকে বুঝাতেছে কৃকলাস-শীর্ণ এক আত্মার স্বরূপ

অফিসি চাকরি ক’রে- ছেড়ে দিয়ে- কল্পনার গবেষণা নিয়ে
কাটাল সে;- মানুষের হাত দেখে তার পর সাধু মনীষায় বহু দিন;
আয়ুর বিকেলবেলা তবু তার মনে হল শরীর ভাঁড়িয়ে
খেয়েছে সে;- সাহেবি চাকরি তার সব-চেয়ে ছিল সমীচীন

অবশেষে এক দিন বিবর্ণ সিন্দুক থেকে অনেক কাগজ বার ক’রে
চল্লিশ বছর ধ’রে কী লিখিত রাত জেগে- আবার অনেক মোম জ্বেলে
পড়িল সে- লিপিস্তূপ প্যাক ক’রে তার পর রাখিল আত্মার কাছে ধ’রে
খুশি হবে কবেকার পৃথিবীর কোন প্রাণ এই সব লেখা কাছে পেলে

সিলমোহরের ছাপ লাগাবে কি- অন্তত দশ মণ লাক্ষা নেড়ে-চেড়ে
(ভাবিতেই) বিঘোর তামাশা তারে হাসাল একটি বার গণিকার বায়ুভূত প্রভাতের মতো
বিশ টন কাগজের মুখে দিল চুরুটের জোনাকি’টা ছেড়ে
অগ্নি-সমারোহে রেঙে দালাইলামার মতো (অবশেষে) হল স্বর্গগত।