বিষয়ের পিছে

বিষয়ের পিছে আমি কারণকে খুঁজে
কারণের মাঝে মূল কারণকে চেয়ে
সর্বদাই সঙ্গতিকে অন্বেষণ ক’রে
অতীব প্রেমের ভরে শুনে গেছি সর্পিণী’র কণ্ঠনালী থেকে
কী ক’রে বাতাস ক্রমে বার হয়ে আসে
সঙ্গীতকে পেতে চেয়ে;- নোনা-ধরা দেয়ালের ফোকরের থেকে
গরম দুপুরে কীট- আপনার অনুজ্ঞাপন
কী ক’রে জানাতে চায় পৃথিবীকে
সঙ্গীতের রূপে;- অথবা সিন্ধুর পারে- ঝাউ-খেতে- নক্ষত্রের রাতে
কী ক’রে পাখির চোখে আগুনের আলপিন ফুঁড়েছে মানুষ
পাখির হৃদয়ে গোল- বিশৃঙ্খল বেলুনের রাত
কী ক’রে সঙ্গীত ব’লে উদ্বোধিত হয়ে উঠে
আপনাকে চিনে নিতে চায় তার পর
গোরু উট গাধার চামড়া নিয়ে মাকড়ের মতো ঠ্যাং মেলে
সারা-দিন পৃথিবীর পথে হাঁটে- নিজের পায়ের
অভিজ্ঞ শব্দের স্রোতে কণ্ঠে তার কেঁদে ওঠে শিস
এ-সব ধারণা ক’রে নিয়ে চুপে আমি
আমার এ-প্রকোষ্ঠের বিবর্ণ চেয়ারে ব’সে থেকে
কোনও এক সুর চাই- আমাদের ন্যূব্জ বিষয়ের
অজ্ঞানতা, ষড়যন্ত্র, অন্ধকার থেকে উঠে সেতুর মতন
স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ জল- শব্দ- শুশ্রূষার দিকে চ’লে গেছে
কিন্তু- তবু- ক্রমশই বোঝা যায় আর-এক অধীপ নেমে আসে
(নেমে আসে)- নিস্তব্ধ মুখোশ প’রে প্রভাতের সূর্যের থেকে
স্ফটিকের মতো পূর্ণ পরিষ্কার প্রতিভায় নেমে
আমাদের স্তম্ভ গড়ে, বিজয়ের সংবাদ বিজ্ঞাপন করে
আমাদের ভিতরের দুর্বল, করুণ যারা তাহাদের নিয়ে
বধির উদ্ভিদ গুল্ম সৃষ্টি করে নদীর কিনারে
বিঘূর্ণিত বাতাসের ইস্পাতের মতন ইস্ক্রুপে
ধরা প’ড়ে গিয়ে মাছ গুল্ম সাপ পাখি উদ্ভিদ
নিজেদের প্রেমিকের মতো ভাবে- তবুও প্রেমিক তারা নয়
নিজেদের মানুষের মতো ভাবে- তবুও মানুষ কেউ নয়
শব্দের তরঙ্গ আছে- তবুও কোথাও সুর নেই।