বিষুবক্রান্তির দিনে

বিষুবক্রান্তির দিনে (পৃথিবীর মাঝখানে দাঁড়িয়ে) সন্ধ্যার অন্ধকার নামতেই
সে একটা সরাইখানায় ঢুকে পড়ল
কিন্তু পর-দিনই সে উত্তরে শীতের দিকে রওনা হল
মনে হল সেইখানে জিনিস রয়েছে
পৃথিবীরও মনে হল: মানুষটা উত্তরের দেশে শীতের লম্বা রাতের ভিতরে গিয়ে দেখুক
মানুষটি ছিপছিপে- ধূসর- মেয়ে কী পুরুষ বোঝা যায় না;
পুরুষ বা নারী: কাকে সে চাইছে?
কী তার জিনিস: মনে হল: ‘সেইখানে জিনিস রয়েছে?’
কালো সমুদ্রের পারে পরগাছা ও ভুসির পাশে গিয়ে দাঁড়াল
পৃথিবীর এ-রকম এক জায়গায়
যেখানে সকালকে বিকেলের চেয়ে পৃথক ব’লে অনুভব করা যায় না
অথবা সে-সময়-যে দুপুরবেলা, তা সে কী ক’রে বলবে?
সূর্য সেখানে অবতার নয়। অবতারবাদ শতাব্দীর হৃদয়ের কথা নয়।
লবণের মতো তেতো জলের নিঃশব্দতা মাইলের-পর-মাইল
অনেক দূরে এক-একটা বস্তু ছুঁয়েছে গিয়ে;
মৃত্যুর পরে মানুষকে ও-রকম বস্তু যদি স্পর্শ করতে হয়!
কিন্তু মৃত্যুর ঢের পূর্বাহ্নে মানুষকে তা স্পর্শ করতে হয়
যদি না একটি অবহিত শতাব্দীর মতো
পিছের ও পরের শতাব্দীর ভারের সমতা রক্ষা ক’রে সে চলতে পারে
তার পর তবুও তাকে স্পর্শ করতে হয়।
কোথাও কোনও অন্য মানুষ নেই (দেখে) সমুদ্রের সমস্ত কৃপণ নীরবতা
এই মানুষের হৃদয়কে এমন ভাবে অধিকার করতে লাগল
যাতে সে যদি নারী হয়, তা হলে সে সত্য-সত্যই মৎস্যনারীর মতন
সাগরের অন্ধকার বালির উপর সমুদ্র তাকে ফেলে রাখবে
তার অজ্ঞাতসার পুরুষের থেকে
নারীর শরীরের থেকে তার শরীরের ছায়ার মতন সর্বদাই ঈষৎ দূরে
নির্জন সমুদ্র ফেলে রাখবে তাকে
সে যদি পুরুষ হয়- তা হলে-
মাছের ফ্রাই কাটলেট রয়েছে- মৎস্যরমণী নেই
এই নির্দোষ আনন্দের জাজ্বল্যমান দায়িত্বের ভিতর
নিসর্গ মানুষের চেয়ে এমনই একান্ত ভাবে সমীচীন।